দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল শনিবার তাঁর দল, আম আদমি পার্টির (AAP), এক বৈঠকে ইস্তফা দেওয়ার করলেন। এই সিদ্ধান্তটি একাধিক চমকের জন্ম দিয়েছে কারণ তিনি মাত্র দুই দিন আগে ছয় মাসের কারাবাস কাটিয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে, জনতার রায় না পাওয়া পর্যন্ত তিনি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসবেন না।
কেজরিওয়ালের এই বক্তব্যকে ঘিরে দিল্লির রাজনীতিতে উত্তেজনা পারদ চড়ছে। তিনি বলেন, “দুই দিনের মধ্যে আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেব। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণই ঠিক করবেন আমি নির্দোষ কিনা। জনগণের রায়েই আমি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসব।” তাঁর মতে, দিল্লির মানুষই প্রকৃত বিচারক এবং তাঁর ভাগ্য তাদের হাতেই নির্ধারিত হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আপের বিধায়কদের মধ্যে শিগগিরই বৈঠক হবে, যেখানে দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত করা হবে। নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দিল্লির নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনা হোক। নভেম্বরেই দিল্লির নির্বাচন করা হোক, মহারাষ্ট্রের সঙ্গে একসঙ্গে।”
কেজরিওয়াল তাঁর ভাষণে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, “এই সরকার ব্রিটিশদের চেয়েও বেশি স্বৈরাচারী।” তিনি দাবি করেন, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এভাবে টার্গেট করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন কেজরিওয়াল।
কেজরিওয়াল আরও জানান, তিনি প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। সিসোদিয়াকেও সম্প্রতি জামিন দেওয়া হয়েছে, যিনি দিল্লির আবগারি নীতি সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত। কেজরিওয়াল বলেন, “মণীশও বলেছেন, জনগণ আমাদের সৎ বলে ঘোষণা না করা পর্যন্ত তিনি মুখ্যমন্ত্রীত্ব গ্রহণ করবেন না। এখন আমাদের ভাগ্য জনগণের হাতে।”
আচমকা এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি নেতা হরিশ খুরানা কেজরিওয়ালের পদক্ষেপকে “নাটক” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “কেজরিওয়াল কেন ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন? তিনি আজই ইস্তফা দিতে পারেন।” বিজেপির পক্ষ থেকে এও বলা হয়েছে যে, তারা যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। “আজ হোক বা কাল, আমরা দিল্লিতে ২৫ বছর পর ক্ষমতায় ফিরব,” বলেন খুরানা।
দিল্লি কংগ্রেসও কেজরিওয়ালের ইস্তফাকে স্বাগত জানিয়েছে। দিল্লি কংগ্রেস সভাপতি দেবেন্দ্র যাদব বলেছেন, “কেজরিওয়াল যদি বন্যা ও পানীয় জলের সংকটের সময় পদত্যাগ করতেন, তাহলে ভালো হতো। আশা করি দিল্লি দ্রুত এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী পাবে যিনি নিজের অফিসে গিয়ে নথিপত্রে স্বাক্ষর করতে পারবেন।”
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us

