বেঙ্গালুরুর প্রযুক্তি চাকরিজীবী অতুল সুভাষের আত্মহত্যার মামলায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁর স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া। গত ৯ ডিসেম্বর, ৩৪ বছর বয়সি অতুল আত্মহত্যা করেন এবং একটি ভিডিও ও ৪৮ পৃষ্ঠার সুইসাইড নোটে নিকিতা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে হয়রানি ও টাকা আদায়ের অভিযোগ আনেন।
তবে, নিকিতা পুলিশকে জানিয়েছেন যে তিনি প্রায় তিন বছর ধরে অতুলের থেকে আলাদা ছিলেন। তিনি বলেন, “আমি যদি তাঁকে হয়রানি করতাম, তবে তাঁর থেকে দূরে থাকতাম কেন?” নিকিতা দাবি করেছেন, বিবাহিত জীবনে তিনিই হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং ২০২২ সালে অতুলের বিরুদ্ধে যৌতুক-সংক্রান্ত হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছিলেন।
বেঙ্গালুরু পুলিশ নিকিতা সিংহানিয়া (২৯), তাঁর মা নিশা (৫৪) এবং ভাই অনুরাগ (২৭)-কে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে আটক করেছে। নিকিতাকে গুরগাঁওয়ের হংকং বাজার রোড এলাকা থেকে এবং তাঁর মা ও ভাইকে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসার পর শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় এবং পরে ১৪ দিনের জন্য পরাপ্পানা আগ্রাহারাতে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।
এ দিকে, অতুল সুভাষের বাবা এবং ভাই তাঁর চার বছরের ছেলের নিরাপত্তা এবং অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
হোয়াইটফিল্ডের ডেপুটি কমিশনার শিবকুমার গুনারে জানিয়েছেন, মামলাটি যথাযথ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। অতুলের লেখা এবং ডিজিটাল সুইসাইড নোটসহ সমস্ত ডিভাইস ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে পড়া সত্ত্বেও, পুলিশ জানিয়েছে যে সমস্ত প্রমাণ সুরক্ষিত এবং আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এর আগে, নিকিতা ২০২২ সালে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে অতুল যৌতুকের দাবিতে তাঁকে মারধর করতেন এবং তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্ককে “পশুর মতো” করে তুলেছিলেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে অতুলের পরিবারের অসন্তোষ, বিশেষ করে বিয়ের উপহার ও অতিরিক্ত ১০ লক্ষ টাকার দাবি, তাঁর বাবার স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ হয়।
অন্য দিকে, অতুল তাঁর সুইসাইড নোটে দাবি করেন যে যৌতুক-সংক্রান্ত মানসিক চাপে তাঁর শ্বশুরের মৃত্যু হয়নি। হার্টের সমস্যার কারণে হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মামলাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অতুলের মৃত্যুর পর থেকে পরিবারের বিষয়েও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরু ইঞ্জিনিয়ার আত্মহত্যা: ন্যায়বিচার, কঠোর ব্যবস্থার দাবি পরিবারের