বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোট শেষ হতেই প্রকাশিত হল এক্সিট পোল। অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষায় এনডিএ (NDA)— অর্থাৎ বিজেপি (BJP) ও জেডিইউ (JDU) জোট—কে স্পষ্ট অগ্রগামী শক্তি হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
২৪৩ আসনের বিধানসভায় ১২২টি আসন প্রয়োজন সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য।
বেশিরভাগ জরিপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এনডিএর ঝুলিতে যেতে পারে ১৩৩ থেকে ১৬৭টি আসন, যা সরাসরি সরকার গঠনের রাস্তা খুলে দিচ্ছে নীতীশ কুমারের সামনে।
অন্যদিকে, মহাগঠবন্ধন (RJD–Congress–Left alliance) পিছিয়ে রয়েছে, তাদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যা হতে পারে ৭০ থেকে ১০২-এর মধ্যে।
প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টি (JSP), যাকে অনেকেই “কিংমেকার” বলে আশা করছিলেন, তাদের ফলাফল নিয়ে হতাশা দেখা যাচ্ছে— অধিকাংশ জরিপে তাদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যা ০ থেকে ৫।
বিভিন্ন এক্সিট পোলের ফল এক নজরে:
| সংস্থা | এনডিএ | মহাগঠবন্ধন | জন সুরাজ পার্টি | অন্যান্য |
| Peoples Pulse | 133–159 | 75–101 | 0–5 | — |
| Peoples Insight | 133–148 | 87–102 | 0–2 | — |
| Matrize | 147–167 | 70–90 | 0 | — |
| Bhaskar | 145–160 | 73–91 | 0–3 | 5–7 |
| P-Marq | 142–162 | 80–98 | 1–4 | — |
নীতীশ কুমার ফের মুখ্যমন্ত্রী?
সব এক্সিট পোলের ইঙ্গিত একটাই— নীতীশ কুমার আবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসতে চলেছেন।
তার মানে বিহারে এনডিএর স্পষ্ট প্রত্যাবর্তন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিহারের ভোটাররা স্থিতিশীলতা ও অভিজ্ঞ নেতৃত্বের ওপর আস্থা রেখেছেন।
এক বিশ্লেষকের বক্তব্য,
“নীতীশ কুমারের প্রশাসনিক দক্ষতা ও উন্নয়ন ভাবনা এবারও এনডিএ-কে এগিয়ে রেখেছে। আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাগঠবন্ধন গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে পারেনি।”
মহাগঠবন্ধন পিছিয়ে, জন সুরাজ প্রভাবহীন
তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে মহাগঠবন্ধন প্রথম দফার প্রচারে যথেষ্ট জমি তৈরি করলেও, শেষ পর্যন্ত ভোটব্যাঙ্ক টানতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অনুমান।
এনডিএর তুলনায় অন্তত ৩০ থেকে ৫০ আসন পিছিয়ে পড়তে পারে তারা।
অন্যদিকে প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টি, যা প্রথমবার নির্বাচনী ময়দানে, প্রায় সব জরিপেই খাতা খোলার লড়াইয়ে দুর্বল।
তাদের সর্বাধিক অনুমানিত আসন সংখ্যা ৫, অনেক জরিপেই ‘০’।
ভোট শতাংশ ও গণনার দিন
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিহারের সব ২৪৩টি আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের (ECI) তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফায় ভোটের হার দাঁড়িয়েছে ৬৭.৪%, যা বিগত বছরের তুলনায় সামান্য বেশি।
চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হবে ১৪ নভেম্বর, যখন সকাল ৮টা থেকে ৩৮টি জেলার গণনা কেন্দ্রগুলোতে ভোটগণনা শুরু হবে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে।
এনডিএর ধারাবাহিকতা বনাম মহাগঠবন্ধনের ভাঙন
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিহারে এবার “স্থিতিশীলতা বনাম পরিবর্তন”-এর লড়াইয়ে স্থিতিশীলতাই জিততে চলেছে। এনডিএর উন্নয়নমূলক প্রচার, বিশেষ করে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, মহিলা কল্যাণ ও শিক্ষায় কাজ, ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
অন্যদিকে, আরজেডি ও কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং স্থানীয় পর্যায়ের সমন্বয়ের অভাব মহাগঠবন্ধনের ফলকে প্রভাবিত করেছে বলে অনুমান।


