নয়াদিল্লি: ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করছে কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি। এ দিকে, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহানের দাবি, বাহিনীতে যুবকদের উপস্থিতি বজায় রাখার জন্য অগ্নিপথ অন্যতম এক প্রধান সংস্কার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্য অনুসাপে, রবিবার (২ জুন) ওড়িশায় অবস্থিত ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আইএনএস চিল্কায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অগ্নিবীরদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময়, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ চৌহান বলেন, “এর বাস্তবায়ন অগ্নিপথ প্রকল্পটি যুবকদের তিনটি পরিষেবায় প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। এটি যুবদের উপস্থিতি বজায় রাখার এবং দক্ষ, সুশৃঙ্খল এবং অনুপ্রাণিত যুবকের মাধ্যমে জাতি গঠনের জন্য গৃহীত অন্যতম প্রধান সংস্কার।”
সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। শনিবার (১ জুন) অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে একটি চিঠি লিখে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এই প্রকল্পের কারণে শহিদ সৈন্যদের পরিবারকে দেওয়া সুবিধার ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। তিনি বলেন, “এই সমস্যাটি জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করে।”
চিঠিতে রাহুল গান্ধী লেখেএন, “নিয়মিত সৈন্যদের তুলনায় আমাদের নিহত অগ্নিবীরদের পরিবারকে দেওয়া সুবিধার প্রকৃতি এবং পরিমাণে বৈষম্যগুলো অবিলম্বে সমাধানের প্রয়োজন।” তিনি আরও লেখেন, “এটা অন্যায়। এই কারণেই কংগ্রেস পার্টি এবং ‘ইন্ডিয়া’ জোটে আমাদের সহযোগীরা ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা করেছে এবং সরকার গঠন করলে এটি বাতিল করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।”
চিঠিতে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে রাহুল গান্ধীর আবেদন, “আমি আপনাকে হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করছি। আমি একমত যে একজন রাষ্ট্রপতি সাধারণত নীতির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন না, যা নির্বাচিত সরকারের আওতাধীন। যাইহোক, আমি বিশ্বাস করি বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় ব্যতিক্রম হতে পারে। আপনি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার। আপনি ভারতের মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার শপথ নিয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগের জন্য কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্পে সুযোগ-সুবিধা ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়েছে। প্রাক্তন অগ্নিবীরদের জন্য বিএসএফে শূন্যপদ সংরক্ষণ, বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় ছাড় সংক্রান্ত একাধিক সংশোধনী এনেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ২০২২ সালের ১৪ জুন ঘোষণার পর থেকেই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ঘোষণার পর থেকে উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরিকল্পনায় একাধিক বদল এনেছে কেন্দ্র।
অগ্নিবীর প্রকল্পের প্রারম্ভিক ঘোষণায় বলা হয়েছিল, চার বছরের মেয়াদ শেষে শুধুমাত্র ২৫ শতাংশকে প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে। বাকি ৭৫ শতাংশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। চার বছর পর অবসরের সময় এককালীন একটা টাকা মিললেও পেনশন এবং অন্য সুবিধা পাবেন না তাঁরা। প্রশ্ন ওঠে, দেশের যুবকদের চাকরির বড়ো ভরসা হল ভারতীয় সেনা। কিন্তু চাকরির স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় থাকছে। চার বছর পর ঘরে ফেরত পাঠানো ৭৫ শতাংশ অগ্নিবীরের কী হবে? এর পর বিক্ষোভের জেরে কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনী এবং অসম রাইফেলসে প্রাক্তন অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ শূন্যপদ সংরক্ষণ করা হয়।
আরও পড়ুন: এক্সিট পোলের পূর্বাভাসে বিজেপির জয়ের ইঙ্গিত, রেকর্ড উচ্চতায় সেনসেক্স ও নিফটি


 
                                    