দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার সরকারি বাসভবনে আগুন লাগার ঘটনায় নগদ অর্থ উদ্ধারের বিষয়টি প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করল সুপ্রিম কোর্ট। শনিবার (২৩ মার্চ) শীর্ষ আদালত দিল্লি হাই কোর্টের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনের একটি সংক্ষেপিত সংস্করণ প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি দেবেন্দ্র কুমার উপাধ্যায় বিচারপতি ভার্মাকে একটি চিঠি দিয়ে তার বাসভবনে পাওয়া নগদ অর্থের হিসাব দিতে বলেন। পাশাপাশি, দিল্লি পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরার পাঠানো কিছু ভিডিও ও ছবি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে, যেখানে দমকলকর্মীদের পোড়া টাকার বান্ডিল বের করতে দেখা গেছে।
বিচারপতি যশবন্ত ভার্মা তার আনুষ্ঠানিক জবাবে দাবি করেন, তিনি এবং তার পরিবার যে অংশটি ব্যবহার করেন, সেখানে কোনো নগদ অর্থ পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, “দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে আপাতত বিচারপতি যশবন্ত ভার্মাকে কোনো বিচারের কাজ না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
এই তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন—পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি শীল নাগু, হিমাচল প্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি জি এস সন্ধাওয়ালিয়া এবং কর্ণাটক হাই কোর্টের বিচারপতি অনু শিবরামন।
এর আগে, সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম বিচারপতি যশবন্ত ভার্মাকে তার পিতৃস্থানীয় আদালত, এলাহাবাদ হাই কোর্টে বদলির সুপারিশ করেছিল। নগদ অর্থ উদ্ধারের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর পাঁচ সদস্যের কলেজিয়াম সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেয়।
সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিচারপতি ভার্মার বদলির প্রস্তাব এবং অভ্যন্তরীণ তদন্ত—এই দুটি বিষয় সম্পূর্ণ স্বাধীন ও পৃথক। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন এবং বিচারপতি ভার্মার উত্তরসহ অন্যান্য নথি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।
এই ঘটনায় ভারতের বিচার বিভাগে বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার ভবিষ্যৎ নিয়েও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। তদন্তের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে তার বিচারিক দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার ভবিষ্যৎ।