বুধবার ইন্ডিয়া ব্লকের নেতারা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পদক্ষেপকে গণতন্ত্র রক্ষার প্রয়াস হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ধনখড় রাজ্যসভার “সবচেয়ে বড় ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী” এবং তাঁর আচরণ দেশের গৌরব ক্ষুণ্ণ করেছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে তাঁকে “সরকারের মুখপাত্র” বলেও অভিহিত করেন।
এক সাংবাদিক সম্মেলনে খাড়গে বলেন, “জগদীপ ধনখড়ের কার্যকলাপ ভারতের মর্যাদায় আঘাত করেছে। এটি কোনও ব্যক্তিগত লড়াই নয়।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, রাজ্যসভায় সবচেয়ে বড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ধনখড় নিজেই। এ প্রসঙ্গে তিনি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
ইন্ডিয়া ব্লকের তরফে রাজ্যসভায় উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের অপসারণের দাবিতে একটি নোটিস জমা দেওয়া হয়েছে। খাড়গে বলেন, ১৯৫২ সাল থেকে এ ধরনের পদে থাকা ব্যক্তিরা নিরপেক্ষ থেকেছেন এবং সবসময় নিয়ম অনুযায়ী সভা পরিচালনা করেছেন। কিন্তু ধনখড়ের আচরণ এই ঐতিহ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম বার রাজ্যসভায় কোনো উপরাষ্ট্রপতিকে অপসারণের জন্য নোটিস দেওয়া হল। নিয়ম অনুযায়ী, প্রস্তাব গ্রহণের আগে ১৪ দিনের নোটিস দিতে হবে এবং ডেপুটি চেয়ারম্যানের অনুমোদনের পর এটি আলোচনার জন্য উঠতে পারে।
রাজ্যসভায় বর্তমানে বিজেপি ও তার সহযোগী দলের ১২১ জন সদস্য রয়েছেন, যেখানে বিরোধী দলের সংখ্যা ৮৬। নিরপেক্ষ দলের মধ্যে ওয়াইএসআরসিপি, বিজেডি, এআইএডিএমকে, বিএআরএস এবং বিএসপির মোট ২৪ জন সদস্য রয়েছেন। বিজেডি নেতা শশ্মিত পাত্র জানান, তাঁদের দল এনডিএ এবং ইন্ডিয়া ব্লক উভয়ের থেকেই সমদূরত্ব বজায় রাখে এবং এই প্রস্তাবের সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে লোকসভার স্পিকারের বিরুদ্ধে তিনটি অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল— ১৯৫৪ সালে জিভি মাভালাঙ্কর, ১৯৬৬ সালে হুকুম সিং এবং ১৯৮৭ সালে বলরাম জাখরের বিরুদ্ধে। মাভালাঙ্কর এবং জাখরের বিরুদ্ধে প্রস্তাব খারিজ হয় এবং হুকুম সিংয়ের প্রস্তাব গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যের সমর্থন মেলেনি।
ধনখড়ের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপটি কংগ্রেসের নেতৃত্বে গৃহীত হয়েছে এবং এটি বিরোধী শিবিরের সঙ্গে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের সাম্প্রতিক উত্তপ্ত বিতর্কের প্রেক্ষিতে এসেছে। বিরোধী পক্ষের অভিযোগ, একাধিক বিষয়ে চেয়ারম্যান পক্ষপাতিত্ব করেছেন।
আরও পড়ুন: ধনখড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে একজোট ‘ইন্ডিয়া’