Home খবর দেশ ইউএপিএ মামলায় মুক্তি পাবার ৭ মাস পর মানবাধিকার কর্মী ড. জি এন...

ইউএপিএ মামলায় মুক্তি পাবার ৭ মাস পর মানবাধিকার কর্মী ড. জি এন সাইবাবার মৃত্যু

হায়দ্রাবাদের নিজাম ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (NIMS) এ শনিবার (১২ অক্টোবর, ২০২৪) প্রয়াত হলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক গোকারাকোন্ডা নাগা সাইবাবা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। চিকিৎসকেরা রাত ৮.৩৬ মিনিটে তাঁর মৃত্যুর খবর জানান।

সপ্তাহখানেক আগে গলব্লাডার সার্জারির পরবর্তী জটিলতার কারণে ১১ অক্টোবর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় তাঁকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই তথ্যটি তার এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন।

হুইলচেয়ার-নির্ভর অধ্যাপক সাইবাবা ২০১৪ সালের ১৯ মে মহারাষ্ট্র পুলিশ, অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর যৌথ দলের হাতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রেফতার হন। তাঁর বিরুদ্ধে মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে সংযোগ রাখার অভিযোগ ছিল। গ্রেফতারের পর তাঁকে নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়েছিল এবং সেখানেই তিনি মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত বন্দী ছিলেন।

২০১৭ সালের মার্চ মাসে মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলির একটি সেশন কোর্ট তাঁকে এবং আরও পাঁচজন অভিযুক্তকে দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। এছাড়াও, তাদের কাছে নকশালপন্থী সাহিত্য পাওয়া গিয়েছিল যা গোপন নকশালিদের এবং গড়চিরোলির সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে সহিংসতায় উস্কানি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

অধ্যাপক সাইবাবা ৭ মার্চ, ২০২৪ নাগপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে মুক্তি পান। দীর্ঘ ৩,৭৯৯ দিন কারাভোগের পর তিনি মুক্ত হন।

গ্রেফতার ও মুক্তির প্রেক্ষাপট

তিনি ২০১৪ সালের ১৯ মে মাওবাদী সংগঠনের সাথে যোগসাজশের অভিযোগে গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইন ইউএপিএ (Unlawful Activities (Prevention) Act) এর আওতায় মামলা করা হয়। ২০১৭ সালে মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলির একটি সেশন কোর্ট তাকে এবং আরও পাঁচজনকে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং মাওবাদীদের সমর্থন করার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। সাইবাবার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল যে তিনি মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং তাদের সহায়তা করছিলেন।

তবে সাইবাবার শারীরিক অবস্থা তার কারাবাসের সময় গুরুতর ছিল। তিনি হুইলচেয়ার-বন্দী ছিলেন এবং ৯০% প্রতিবন্ধী ছিলেন, যার ফলে তাঁর আইনজীবীরা বারবার তার চিকিৎসার জন্য জামিনের আবেদন করেন। মানবাধিকার কর্মীরা এবং তার সমর্থকরা দাবি করেছিলেন যে তাঁকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আটক করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

অবশেষে, মার্চ ২০২৪ সালে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ তার সাজা বাতিল করে এবং তাঁকে খালাস করে। আদালত রায় দেয় যে তার বিরুদ্ধে যে প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছিল, তা অপর্যাপ্ত এবং আইনের ফাঁকফোকর ছিল।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version