ভারতের প্রাণ, গঙ্গা নদী নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল আইআইটি রূড়কির একটি সাম্প্রতিক গবেষণা। হিমালয় থেকে সমতলে নামার পর গঙ্গার জলের প্রায় ৫৮ শতাংশ গ্রীষ্মে বাষ্প হয়ে যায়, দাবি করছেন গবেষকরা। শুধু তাই নয়, গঙ্গার গ্রীষ্মকালীন প্রবাহের প্রধান উৎস বরফগলা জল নয়, বরং ভূগর্ভস্থ জল, এমনটাও উঠে এসেছে এই গবেষণায়।
আইআইটি রূড়কির হাইড্রোলজির অধ্যাপক অভয়ানন্দ এস. মৌর্য-র নেতৃত্বে গবেষণা দল প্রায় দুই দশক ধরে ফিল্ড ডেটা বিশ্লেষণ করেছেন। এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নাল Hydrological Processes-এ।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে—
- সমতলে পৌঁছনোর পর গঙ্গার জলপ্রবাহ প্রায় ১২০ শতাংশ বেড়ে যায়, যার মূল উৎস হল ভূগর্ভস্থ জল।
- কিন্তু গ্রীষ্মকালে নদীর প্রবাহ থেকে বাষ্প হয়ে উবে যায় ৫৮ শতাংশেরও বেশি জল।
- এর ফলে গ্রীষ্মকালীন সময় গঙ্গা নদীর জলের ঘাটতি তৈরি হয়, যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে কৃষি ও জনজীবনে।
এতদিন পর্যন্ত স্যাটেলাইট ডেটার ভিত্তিতে উত্তর ভারতের ভূগর্ভস্থ জলের সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল। কিন্তু রূড়কির গবেষণার দাবি, মধ্য গঙ্গা সমভূমির ভূগর্ভস্থ জলের স্তর এখনও স্থিতিশীল, বিশেষ করে হাজার হাজার হ্যান্ড পাম্প থেকে পাওয়া ডেটায় এ তথ্য স্পষ্ট।
গবেষক অধ্যাপক মৌর্যের মতে, গঙ্গার স্বাস্থ্য এবং জলপ্রবাহ বজায় রাখতে হলে—
- গঙ্গার উপনদীগুলি পুনরুজ্জীবিত করা,
- ভূগর্ভস্থ জলের পুনঃভরণ বাড়ানো,
- এবং বাষ্পীভবনের ফলে জলের ক্ষয় কমানোর জন্য কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং অতিরিক্ত মানবিক হস্তক্ষেপ যখন নদীর ভবিষ্যৎকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে, তখন এই গবেষণা গঙ্গার হাইড্রোলজির নতুন ব্যাখ্যা দেয় এবং টেকসই ব্যবস্থাপনার বিজ্ঞানসম্মত রূপরেখা তৈরি করে দেয়।
আরও পড়ুন : ধূমপান না করলেও বাড়ছে ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি! দায়ী পাঁউরুটি, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, সোডা?