গ্রেটার নয়ডার নিক্কি খুনে একাধিক কারণ সামনে আসছে। পুলিশের তদন্ত ও পরিবারের অভিযোগে দেখা যাচ্ছে, পণ দাবি, বেকার স্বামী ও নারীর স্বাধীনতার উপর নিষেধাজ্ঞা—এই সবকিছু মিলিয়েই মৃত্যু ফাঁদে ঠেলে দিয়েছে তরুণীকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিপিন ভাটি ও তাঁর পরিবার নিক্কির কাছ থেকে ৩৬ লক্ষ টাকা পণ চাইছিল। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই গাড়ি ও টাকার দাবি বেড়েই চলেছিল। নিক্কির বাবা ভিখাহরি সিং বলেন, “কখনও বলেছে আমাদের মার্সিডিজ দাও, কখনও আবার স্করপিও চাই। মেয়ের নিজের পার্লার চালাতে সাহায্য করেছিলাম, কিন্তু জামাই সেখান থেকেও টাকা চুরি করত।”
অন্যদিকে, বিপিন নিজে ও তাঁর ভাই কাজকর্ম করতেন না। সংসারের খরচ চলত নিক্কির আয়ে। এই আর্থিক নির্ভরতা থেকেই ক্রমে দাম্পত্য সম্পর্কে অশান্তি তৈরি হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে, নিক্কি এবং তাঁর দিদি কঞ্চন দু’জনেই “Makeover by Kanchan” নামে একটি বিউটি চ্যানেল চালাতেন ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে। পরিবারে বাধায় সেই বিউটি পার্লার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন তাঁরা।
২১ আগস্ট বিকেলে নিক্কি জানান তিনি ও দিদি কঞ্চন আবার বিউটি পার্লার চালু করবেন। সেই সিদ্ধান্তে বিপিন বাধা দেন। পুলিশের বক্তব্য, বিপিন বলেন, “আমাদের পরিবারে ইনস্টাগ্রামে রিল পোস্ট করা বা পার্লার চালানো মানা।”
এই নিয়েই তর্ক থেকে মারধরে পরিস্থিতি গড়ায়, যা শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
নিক্কির পরিবার অভিযোগ করেছে, গত ন’বছর ধরে দুই বোনকেই শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ঘন ঘন ঝগড়া, পণের জন্য চাপ, এবং মারধর ছিল নিত্যদিনের ঘটনা।
বৃহস্পতিবার রাতে মারধরের পর আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় নিক্কির। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, স্বামী ও আরেক মহিলার হাতে নিক্কির উপর নির্যাতনের দৃশ্য। পরে আগুনে পুড়ে যাওয়া অবস্থায় তাঁকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা যায়।
শনিবার বিপিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে তাঁর পায়ে আঘাত লাগে। তবে কোনও অনুশোচনা না দেখিয়ে তিনি বলেন, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতেই পারে।” বিপিন বারবার দাবি করেন আত্মহত্যা করেছে নিক্কি। বর্তমানে তিনি ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।