বস্ত্রশিল্পে জিএসটি হার বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দ্য ক্লোদিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (সিএমএআই)। সম্প্রতি মন্ত্রীসভার একটি কমিটি পোশাক শিল্পের উপর জিএসটি হার পুনর্বিন্যাসের যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংগঠনটি।
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, ১,৫০০ টাকার কম মূল্যের প্রস্তুত পোশাকের উপর ৫ শতাংশ জিএসটি চালু থাকবে। তবে, ১,৫০০ থেকে ১০,০০০ টাকার মধ্যে মূল্যের পোশাকের ক্ষেত্রে জিএসটি হার বেড়ে ১৮ শতাংশ হবে। ১০,০০০ টাকার উপরে মূল্যের পোশাকগুলির জন্য সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ জিএসটি ধার্য করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সিএমএআই এর মতে, এই সিদ্ধান্ত শিল্পে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলি (SMEs) — যেমন স্পিনিং, উইভিং এবং পোশাক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি — যাদের লাভের মার্জিন খুবই কম, তারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। এতে প্রায় ১ লক্ষ চাকরি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
সংগঠনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “এই জিএসটি বৃদ্ধির ফলে আনুষ্ঠানিক খুচরো বাজারে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বা বেআইনি চ্যানেলের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হবেন। এর ফলে বৈধ খুচরো বিক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আর বেআইনি ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।”
সিএমএআই আরও জানায়, “এই কর বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। এতে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মূল্যে সংবেদনশীল ক্রেতারা, বিশেষত মহিলারা। উৎসব, অনুষ্ঠান উদযাপনের সঙ্গে যুক্ত পোশাকের উপর উচ্চতর করের কারণে চাহিদা আরও কমবে, যা ইতিমধ্যেই নিম্নমুখী। এর ফলে অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
সিএমএআই সরকারের উদ্দেশে প্রতি অনুরোধ করেছে, এই প্রস্তাবিত কর পুনর্বিন্যাস বাতিল করা হোক। সংগঠনের মতে, কর কাঠামো সরলীকরণের উদ্দেশ্য প্রশংসনীয় হলেও, নীতি পরিবর্তন এমন হতে হবে যা শিল্পের স্থিতিশীলতা ও বৃদ্ধিকে শক্তিশালী করে। বস্ত্রশিল্প ইতিমধ্যেই নানা চাপে রয়েছে। এই ধরনের কর বৃদ্ধি শিল্পের ভারসাম্যহীনতা আরও বাড়াবে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে বলে মনে করে তারা।