Home খবর দেশ এ বছর তাপপ্রবাহ আগেভাগেই শুরু, উদ্বেগজনক কারণ জানালেন বিজ্ঞানীরা

এ বছর তাপপ্রবাহ আগেভাগেই শুরু, উদ্বেগজনক কারণ জানালেন বিজ্ঞানীরা

0

চলতি বছর ভারতে প্রত্যাশার চেয়েও আগেভাগেই তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিম উপকূলে তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবার একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এবারের তাপপ্রবাহের আগমন মূলত চরম বৃষ্টিহীন শীতকালসহ বিভিন্ন কারণের ফল।

পশ্চিম উপকূলে, বিশেষত মহারাষ্ট্র ও গোয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে, তীব্র গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া অনুভূত হচ্ছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (IMD) মুম্বইয়ের জন্য ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারিতে তাপপ্রবাহ সতর্কতা জারি করেছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি, মুম্বইয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

মহারাষ্ট্র ও গোয়ার অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চলেও ৩৭ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। কর্নাটক ও গুজরাতের উপকূলীয় এলাকাগুলোতেও গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজ করছে, যেখানে তাপমাত্রা ৩৫ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে।

ভারতে সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে তাপপ্রবাহ দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে এটি জুলাই পর্যন্ত চলতে পারে। উপকূলীয় অঞ্চলে তাপপ্রবাহ ঘোষণা করার জন্য তাপমাত্রার স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ৪.৫ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হতে হয়।

আইএমডি পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী কয়েকদিন গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া বজায় থাকবে, যদিও তাপপ্রবাহ কিছুটা কমতে পারে।

আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের তীব্র শুষ্ক শীতকালের কারণে তাপমাত্রা এত দ্রুত বেড়েছে। কোনো আবহাওয়া ব্যবস্থা সক্রিয় না থাকায় বৃষ্টি সে ভাবে হয়নি। মধ্যপ্রদেশের উপর স্থায়ী অ্যান্টি-সাইক্লোন গরম পূর্বী বাতাসকে পশ্চিম উপকূলের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এর ফলে সমুদ্রের বাতাস দেরিতে এসেছে এবং ভূমিভাগের বাতাস দীর্ঘস্থায়ী হয়ে তাপমাত্রা বাড়িয়েছে। ফলে উপকূলের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গরমের অস্বস্তি বহুগুণ বেড়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েদার এজেন্সি ক্লাইমেট সেন্ট্রাল-এর ক্লাইমেট শিফট ইনডেক্স (CSI) অনুযায়ী, ২৫-২৭ ফেব্রুয়ারি গোয়ার পানাজির তাপমাত্রা মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্তত পাঁচ গুণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একইভাবে, মুম্বইয়ের তাপমাত্রা অন্তত তিন গুণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ব্রিটেনের ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমসফেরিক সায়েন্স এবং রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগ-এর গবেষক ড. অক্ষয় দেউরাস জানিয়েছেন, “মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া ও জলবায়ুর চরম অবস্থা বাড়িয়ে দিচ্ছে। বর্তমানে, সব মহাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উষ্ণতা দেখা যাচ্ছে, যা বিশ্ব উষ্ণায়নের স্পষ্ট প্রমাণ। যদি আমরা দ্রুত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে না পারি, তাহলে আবহাওয়ার রেকর্ড আরও ঘন ঘন ভাঙতে থাকবে।”

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version