৭৭তম স্বাধীনতার দিবস উদযাপন করছে ভারত। স্বাধীনতার রঙে রেঙেছে সারা দেশ। আমরা প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি। দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী বিপল্পবীদের স্মরণ করার ধারাবাহিক উপলক্ষ। দেশের স্বাধীনতায় নারীদের অবদান অনেক। স্বাধীনতা দিবসের এই ৭৬তম বার্ষিকীর বিশেষ উপলক্ষে আমরা জানব এমন পাঁচজন শক্তিশালী নারীর কথা, যাঁরা দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন সুখ-স্বাচ্ছন্দের জীবনকে দূরে ঠেলে।
ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই
ঝাঁসির রানি লক্ষ্মী বাইয়ের নাম কে না জানে? তিনি ছিলেন দেশের প্রথম নারী বিপ্লবী। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নিজের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করেছিলেন। তিনিই প্রথম মহিলা যিনি একটি শিশুকে পিঠে নিয়ে হাতে তলোয়ার নিয়ে শত শত ব্রিটিশ সৈন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। রানি লক্ষ্মীবাই মহারাষ্ট্রীয় কারাদে ব্রাহ্মণ পরিবারের। যেখানে মানুষ অন্নের জন্য ক্ষুদার্ত, সেখানে রানি লক্ষ্মীবাই বিলাসিতা ত্যাগ করে ময়দানে নেমেছিলেন ইংরেজদের পরাজিত করতে।
সরোজিনী নায়ডু
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি (সভানেত্রী) সরোজিনী নায়ডু। তিনি সমাজে নারীদের সচেতন করতে ব্যাপক আকারে প্রচার শুরু করেন। তিনি শুধু রাজনীতিতে নিজের ছাপ রাখেননি, একজন ভালো লেখিকাও ছিলেন। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি কায়সার-ই-হিন্দ পুরস্কার ফিরিয়ে দেন। তাঁকে নাইটিঙ্গল অফ ইন্ডিয়া বলা হয়। তিনি ১৯৩০, ১৯৩২, ১৯৪২-৪৩ সালে কারাবাসে যান আন্দোলনের জন্য।
বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত
অভিজাত পরিবারের জন্ম বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতের। তিনি ছিলেন জওহরলাল নেহরুর বোন। তিনিও দেশের স্বাধীনতার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তৈরি করেছেন নিজের পরিচয়। জেলে যেতে হলেও শেষ পর্যন্ত আন্দোলনে অবিচল ছিলেন তিনি।
ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সায়গল
পেশায় চিকিৎসক ছিলেন ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সায়গল। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। কিন্তু লোভনীয় চাকরি ছেড়ে তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজের রানি ঝাঁসি রেজিমেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে আজাদ হিন্দ ফৌজের নারী সংগঠন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীও ছিলেন তিনি।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
মেধাবী ছাত্রী ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। আইএ পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ড থেকে ফার্স্ট হয়েছিলেন। বেথুন কলেজ থেকে ভালো রেজাল্ট করার জন্য পারিতোষিকও পেয়েছিলেন। ডিস্টিংশন-সহ বিএ পাশ করেন। স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পাওয়ার পর পরই বছরই মাস্টারদা সূর্য সেনের সঙ্গে সশস্ত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পাহাড়তলীর ইউরোপিয়য়ান ক্লাব আক্রমণকালে পুলিশ ঘিরে ফেললে সাইনাইড খেয়ে মাত্র একুশবছর বয়সে শহিদ হয়েছিলেন প্রীতিলতা।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস ২০২৩: জানুন থিম, ইতিহাস এবং তাৎপর্য