বেঙ্গালুরু: টানটান প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে চাঁদের মাটিতে পা রাখল চন্দ্রযান ৩। পরিকল্পনামাফিক বুধবার নির্দিষ্ট সময়েই চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি ছুঁল ভারতীয় মহাকাশযান। এর আগে কোনো দেশই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অভিযান চালায়নি। এই সফল অভিযানে মহাকাশ-শক্তি (space power) হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চিনের পরেই ভারত স্বীকৃতি পেল।
এই চন্দ্র-অভিযান নিয়ে উত্তেজনা ও আগ্রহের পাশাপাশি উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠাও যথেষ্ট ছিল। বিশেষ করে মাত্র চার দিন আগে রাশিয়ার চন্দ্র-অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পরে ভারতের অভিযান নিয়ে সাধারণ মানুষ বেশ উদ্বেগে ছিল। রাশিয়ার মহাকাশযান লুনা ২৫ ভেঙে পড়ার পর ভারতের এই সাফল্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের এই অভাবনীয় সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘ব্রিক্স’-এর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মোদী এখন দক্ষিণ আফ্রিকায় আছেন। সেখানে বসেই তিনি চন্দ্রযান ৩-এর অভিযান প্রত্যক্ষ করেন। চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান ৩ নামার পরেই তিনি ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বলেন, “এই মুহূর্তটি কখনও ভোলা যাবে না। এটা অভূতপূর্ব। এটা নতুন ভারতের এক জয়ধ্বনি।”
বুধবার বিকেল থেকেই ইসরো-সহ দেশের বিভিন্ন বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা, অফিসকর্মী মায় সাধারণ মানুষ পর্যন্ত টিভির দিকে চোখ রেখে বসেছিলেন। ‘চন্দ্রযান ৩’ চাঁদের মাটির স্পর্শ করতেই আনন্দে সবাই চিৎকার করে ওঠেন। অনেকেই উত্তেজনায় নাচানাচি শুরু করে দেন। বহু মানুষ জাতীয় পতাকা নাড়তে থাকেন।
ইসরোর বিজ্ঞানী আর কর্মীরা হাততালি দিয়ে ওঠেন। একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। রাস্তাঘাটে শুরু হয়ে যায় নাচানাচি। শুরু হয় বাজি ফাটানো। সারা দেশ যেন এক উৎসবে মেতে ওঠে।
‘চন্দ্রযান ৩’ চাঁদে নামতেই ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ বলেন, “ভারত চাঁদে।” তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চিনের পরেই ভারতই হল চতুর্থ দেশ যারা সাফল্যজনক ভাবে চাঁদের মাটিতে মহাকাশযান নামাতে পারল।
এটা ছিল ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্র-অভিযান। এর আগে ২০১৯-এ ইসরোর ‘চন্দ্রযান ২’ মহাকাশযানকে চাঁদের কাছাকাছি কক্ষপথে স্থাপন করা গেলেও তার ল্যান্ডার ভেঙে পড়ে। ফলে সেই অভিযান ব্যর্থ হয়।