ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানা কয়েকদিন ধরে চলা মিসাইল, ড্রোন ও গোলাগুলির লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে শনিবার বিকেল ৫টা থেকে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণার ঠিক পরেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কড়া বার্তা দেন সন্ত্রাসের মদতদাতাদের উদ্দেশে—”সন্ত্রাসবাদকে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। ভারত বরাবরই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও সেই অবস্থান বজায় থাকবে।”
এক্স-এ (পূর্বতন টুইটার) করা পোস্টে তিনি জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক অভিযানের অবসানে একটি বোঝাপড়ায় পৌঁছানো হয়েছে। একই বার্তা প্রতিধ্বনিত হয়েছে সরকারের তরফে জারি হওয়া ব্রিফিংয়েও—”আমরা সদা সতর্ক এবং সম্পূর্ণ প্রস্তুত। দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ বলেন, “পাকিস্তানের প্রতিটি দুঃসাহসিকতার জবাব শক্তভাবে দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও যেকোনও রকম উত্তেজনার মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। জাতির সুরক্ষার স্বার্থে প্রয়োজন হলে সমস্তরকম সামরিক পদক্ষেপ নিতে আমরা সক্ষম।”
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সরকারের প্রথম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রী। তিনি জানান, ভারত ও পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (DGMO)-এর মধ্যে দুপুর ৩.৩০ টায় টেলিফোনে আলোচনা হয় এবং তারা স্থল, আকাশ ও জলপথে সব ধরনের গুলি চালানো ও সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে সম্মত হন। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে আজ বিকেল ৫টা থেকে। আগামী সোমবার দুপুর ১২টায় ফের একবার দুই দেশের DGMO-এর মধ্যে আলোচনা হবে।
যদিও এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আরও আকস্মিক মোড় নেয়, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক এক্স-পোস্টে জানান, এই চুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতা করেছে এবং “এক দীর্ঘ রাতের আলোচনা”-র পর এই ফল মিলেছে।
তবে এই অবস্থান ছিল মার্কিন সরকারের আগের বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। মাত্র একদিন আগেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছিলেন, “এই যুদ্ধ আমাদের বিষয় নয়। আমেরিকা ভারতকে অস্ত্র নামাতে বলতে পারে না, পাকিস্তানকেও নয়। আমরা কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাব, কিন্তু সরাসরি হস্তক্ষেপ করব না।”
এই পরিস্থিতিতে শান্তি প্রক্রিয়ার সূচনা হলেও ভবিষ্যতে সন্ত্রাস, সীমান্ত উত্তেজনা ও আন্তর্জাতিক কূটনীতি কোন পথে যাবে, তা এখন সময়ই বলবে।