রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ শহর থেকে যাত্রা শুরু করেছে ভারতীয় নৌবাহিনীর নতুন গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট, আইএনএস তুশিল (INS Tushil)। গত ৯ ডিসেম্বর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের উপস্থিতিতে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১২৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৩,৯০০ টন ওজনের এই যুদ্ধজাহাজ ব্রহ্মোস সুপারসনিক মিসাইলে সজ্জিত এবং এটি ভারতীয় নৌবাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলে যুক্ত হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত মহাসাগরে ভারতের সামুদ্রিক শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আইএনএস তুশিল। এটি মূলত আরব সাগর এবং পশ্চিম ভারত মহাসাগরে অবস্থান করবে। চিন ও পাকিস্তানের নৌসেনার ক্রমবর্ধমান ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে এই যুদ্ধজাহাজ ভারতের জন্য কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডিফেন্স স্টাডিজ সেন্টারের গবেষক ডংকিউন লি সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলছেন, “চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা সম্পর্ক এবং বেজিংয়ের গওয়াদার বন্দর ব্যবহারের আগ্রহের কারণে, ভারত মহাসাগরে ভারতের নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী করবে আইএনএস তুশিল।”
প্রাক্তন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) অরুণ প্রকাশ বলেন, “আইএনএস তুশিল-র অন্তর্ভুক্তি নৌবাহিনীর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনারই অংশ। ভারত মহাসাগরে চিনের ক্রিয়াকলাপ মাথায় রেখে নৌবাহিনী তাদের ভবিষ্যৎ কৌশল সাজিয়েছে।”
আইএনএস তুশিল ভারতীয় নৌবাহিনীর আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষামূলক ক্ষমতা বাড়াবে, বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নৌবাহিনীর প্রধান সমস্যা এখনো জলের তলদেশে যুদ্ধের ক্ষমতা নিয়ে।
কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ড. ওয়াল্টার ল্যাডউইগ বলেন, “আইএনএস তুশিল নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে চিনা নৌবাহিনী প্রতি একটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের পরিবর্তে ৩-৫টি যুদ্ধজাহাজ অন্তর্ভুক্ত করছে।”
নতুন সাবমেরিন অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দিয়ে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো অতুলকুমার বলেন, “সাবমেরিন ছাড়া শত্রুপক্ষকে গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ থেকে দূরে রাখা কঠিন। ভারতীয় নৌবাহিনীকে সাবমেরিন ফ্লিট আধুনিকীকরণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।”
আইএনএস তুশিল-এর অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় নৌবাহিনীর ক্ষমতা বাড়ালেও, সাবমেরিন ফ্লিটের ঘাটতি পূরণ না করলে সামুদ্রিক নিরাপত্তায় চ্যালেঞ্জ থেকেই যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: ইন্ডিয়া ডট কম