মহারাষ্ট্রের ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে বিজেপির বিরুদ্ধে নগদ টাকা বিলনোর অভিযোগ বিরোধীদের। বিরোধী জোট বহুজন বিকাশ আঘাড়ী অভিযোগ করেছে, বিজেপির প্রার্থী রাজন নাইক এবং দলের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বিনোদ তাওড়ে পালঘর জেলার বিরার অঞ্চলের একটি হোটেলে ভোটারদের প্রভাবিত করতে নগদ টাকা বিতরণ করেন।
বহুজন বিকাশ আঘাড়ীর বিধায়ক ক্ষিতিজ ঠাকুর তাঁর সমর্থকদের নিয়ে ওই হোটেলে পৌঁছান। সেখানে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সমর্থকরা বিনোদ তাওডেকে ঘেরাও করেন এবং স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা দাবি করেন, হোটেলের ভিতরে নগদ টাকা ভর্তি খাম ও ডায়েরি পাওয়া গেছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, সমর্থকরা তাওডের সামনে টাকা উঁচিয়ে ধরছেন।
বিরোধীদের অভিযোগ
বহুজন বিকাশ আঘাড়ীর সভাপতি হিতেন্দ্র ঠাকুর অভিযোগ করেছেন, ওই হোটেলে প্রায় ৫ কোটি টাকা বিলি করা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, তাওড়ের হাতে একটি ডায়েরি ছিল যেখানে নগদের বিবরণ লেখা ছিল।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বিজেপিকে টাকা বিলিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করার চেষ্টা করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তারা এক্স (আগের টুইটার)-এ পোস্টে বলেছে, “শীর্ষ নেতারাও এই কাজে যুক্ত। নির্বাচন কমিশনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এনসিপি (শরদ পওয়ার) নেত্রী সুপ্রিয়া সুলের মন্তব্য, “নোট বাতিলের পর এত নগদ টাকা কোথা থেকে এল? এত বড় মাপের নেতারা যদি যুক্ত থাকেন, তা সত্যিই অবাক করে।”
শিবসেনা (ইউবিটি)-র নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী অভিযোগ করেন, “উদ্ধব ঠাকরের ব্যাগ একাধিকবার চেক করা হয়েছিল, কিন্তু যারা প্রকৃতপক্ষে নগদের ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে ঘুরছিল, তারা ধরা পড়েনি। এখন অপেক্ষা করছি, বিজেপি এবং তাওড়ে-র বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।”
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপি অভিযোগগুলিকে “ভিত্তিহীন” এবং রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে আখ্যা দিয়েছে। তাদের দাবি, তাওড়ে সেখানে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন। তারা নির্বাচন কমিশনকে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে প্রকৃত ঘটনা সামনে আনতে বলেছে।
নির্বাচন কমিশনের অবস্থান
মহারাষ্ট্রের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ কুলকর্ণি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোট
মহারাষ্ট্রে বুধবার (২০ নভেম্বর, ২০২৪) ভোটগ্রহণ হবে। রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। গতবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-শিবসেনা জোট ২৮৮ আসনের মধ্যে ১৬১টি আসনে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রিত্বের রোটেশন ইস্যুতে জোট ভেঙে যায়। এরপর উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা কংগ্রেস ও এনসিপি (শরদ পাওয়ার)-র সঙ্গে মিলে মহা বিকাশ আঘাড়ী সরকার গঠন করে।
২০২২ সালে একনাথ শিন্ডের বিদ্রোহে শিবসেনা বিভক্ত হয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। পরে অজিত পওয়ারের বিদ্রোহে এনসিপিও বিভক্ত হয়। বর্তমানে মহা বিকাশ আঘাড়ী ও মহাযুতি দুই শিবিরের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে।