প্রায় দু’দশক আগে এক ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে তাঁর মৃত স্ত্রীর পরিবারের তোলা একগুচ্ছ অভিযোগ খারিজ করে দিল হাইকোর্ট। মৃত মহিলার পরিবারের অভিযোগ ছিল, শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে টিভি দেখতে না দেওয়া, মন্দিরে একা যেতে না দেওয়া এবং মেঝেতে শোওয়ানোর মতো বিষয়ে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।
সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টের আওরঙ্গাবাদ বেঞ্চ সেই ২০ বছর পুরনো মামলার রায় দিয়ে মৃত মহিলার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে নিয়ে আসা নির্যাতনের অভিযোগ খারিজ করেছে। মহিলার পক্ষে এই অভিযোগগুলোকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারা অনুযায়ী “গুরুতর” পর্যায়ের নিষ্ঠুরতা হিসেবে গণ্য করেনি আদালত।
এই মামলায় আদালত জানায়, অভিযোগের অধিকাংশই পারিবারিক কলহের কেন্দ্রভূমিতে আবর্তিত হয়েছে এবং এগুলো শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এই রায়ের ভিত্তিতে, অভিযুক্ত ব্যক্তি, তাঁর বাবা-মা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে দেওয়া নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। নিম্ন আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে ৪৯৮এ ও ৩০৬ ধারায় নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এর পর তাঁরা হাইকোর্টে আবেদন করেন।
আদালতের ১৭ অক্টোবর তারিখের রায়ে বিচারপতি অভয় এস ওয়াঘওয়াসে এই মামলার মূল অভিযোগগুলো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন। অভিযোগের মধ্যে ছিল, মৃত মহিলাকে খাবার রান্নার বিষয়ে কথা শোনানো, টিভি দেখায় বাধা, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা ও একা মন্দিরে যাওয়ায় নিষেধ, তাঁকে মেঝেতে শোওয়ানো এবং নিজে হাতে আবর্জনা পরিষ্কার করতে বাধ্য করা। এছাড়াও মৃত মহিলার পরিবারের দাবি ছিল, তাঁকে রাতের বেলায় জল আনতে বাধ্য করা হতো।
তবে, আদালত সাক্ষীদের বিবৃতির মাধ্যমে জানতে পারে যে, মৃত মহিলার শ্বশুরবাড়ি বরঙ্গাঁও গ্রামে মাঝরাতে জল সরবরাহ করা হতো এবং সেখানকার অধিকাংশ বাড়িতে সবাই রাত দেড়টা নাগাদ জল সংগ্রহ করত।
এই রায়ের মাধ্যমে আদালত স্পষ্টভাবে জানায় যে, পারিবারিক নির্দিষ্ট কিছু অভ্যাসের কারণে যেসব ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী নিষ্ঠুরতার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। এ ধরনের সাক্ষ্যপ্রমাণ সামনে রেখেই অভিযুক্তদের মুক্তি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের অবসর, আরজি কর-সহ রাজ্যের পাঁচ মামলা ‘অমীমাংসিত’