কলকাতা: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ বা কার্যকর করা নিয়ে বড়ো খবর। সোমবারই আইন কার্যকর করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এরই মধ্যে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
লোকসভা ভোটের আগেই দেশ জুড়ে চালু হয়ে গেল সিএএ। একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিএএ চালু হওয়ার কথা জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
২০১৯ সালে আইনে পরিণত হলেও প্রায় সাড়ে চার বছর সময় ধরে তা কার্যকর হয়নি। তবে, ২০২০ সাল থেকে আইন কার্যকর করার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এখন যেহেতু কেন্দ্রের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তাই বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আসা অ-মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দিতে পারে সরকার। শর্ত মেনে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এই তিন দেশ থেকে আসা ছয়টি ‘সংখ্যালঘু’ সম্প্রদায়ের মানুষকে। এই ছয় সম্প্রদায় হল – হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই সিএএ বিল পাশ করিয়েছিল মোদী সরকার। ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ হয়েছিল। সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পরে দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও সই করেছিলেন সিএএ বিলে। তবে কেন্দ্রের তরফে এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। তবে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জোরাল দাবি করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে সিএএ বিধি লাগু হবেই। কোনওভাবেই এই আইন বলবৎ হওয়া আটকানো যাবে না। সেই মতোই লোকসভা ভোটের আগে কার্যকর হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন।
এ দিন বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, পুরো রিপোর্ট দেখার পর কাগজ হাতে পেয়ে এ বিষয়ে মুখ খুলবেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “যদি কোনো বৈষম্য হয় সে জিনিস আমরা মানি না। সেটা ধর্ম বৈষম্য, বর্ণ বৈষম্য বা লিঙ্গ বৈষম্য যাই হোক না কেন।”
তাঁর কথায়, ‘‘নির্বাচন এলে কিছু একটা খাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ওরা। ইতিমধ্যে কিছু সংবাদমাধ্যম দেখাতে শুরু করেছে, আজ রাতের মধ্য়ে নাকি সিএএ চালু হবে। আমার কথা হল, ২০২০ সালে সিএএ পাশ হয়েছিল। তার পর চার বছর লেগে গেল। আজ নির্বাচনের দু’তিন দিন আগে সিএএ চালু করার প্রয়োজন হল? আসলে এটা রাজনৈতিক পরিকল্পনা।’’
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “আমি বিস্তারিত দেখার পর মঙ্গলবার বলব। তবে ক্যা দেখিয়ে এনআরসি নিয়ে এসে কারও যারা এখানকার নাগরিক, তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয় আমরা কিন্তু চুপ থাকব না?”
আরও পড়ুন: জায়গার অভাবে ভুগছে বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতাল, সংলগ্ন সরকারি জমিতে প্রোমোটারের নজর