Home খবর দেশ মণিপুরে হিংসার ঘটনা ‘পূর্ব পরিকল্পিত’, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি কংগ্রেসের

মণিপুরে হিংসার ঘটনা ‘পূর্ব পরিকল্পিত’, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি কংগ্রেসের

মণিপুরে হিংসার ভয়াবহ ছবি। ইকনোমিকস টাইমস-এর সৌজন্যে

নয়াদিল্লি: অগ্নিগর্ভ মণিপুর। বর্তমানে অশান্তি কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। তবে দফায় দফায় নতুন করে উত্তপ্ত হচ্ছে কিছু এলাকা। বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মণিপুরে হিংসার ঘটনা ‘পূর্ব পরিকল্পিত’ বলে অনুমান করা হচ্ছে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে অবিলম্বে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা উচিত।

ক্ষতিপূরণ দাবি

কংগ্রেস মুখপাত্র এবং মণিপুরে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ভক্তচরণ দাস দাবি করেছেন, হিংসার ঘটনায় যাঁরা প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তাঁদের ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ ছাড়া যাঁদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, তাঁদের জন্য দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ।

এ দিন একটি সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত হয়ে তিনি আরও বলেন, আহতদের অবিলম্বে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যাঁরা ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের ফিরে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ রাজ্যের বিজেপি সরকার’।

কেন রাষ্ট্রপতি শাসন

তিনি বলেন, ‘হিংসার ঘটনা বন্ধ করতে অক্ষম বিজেপি সরকার। নিরপরাধ মানুষকে উদ্ধার করতে অথবা ত্রাণশিবিরে থাকা ঘরছাড়াদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাও দিতে পারছে না রাজ্য সরকার। হিংসা বন্ধ করার চেষ্টা করলেও তা এখনও ঘটছে। আসলে রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকার সংবিধান মেনে কাজ করছে না। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি শাসনই সম্বল। তা হলে জবাবদিহি করার দায় বর্তাবে’।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর

কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখনও রাজ্যে আসেননি। এমনকী শান্তির জন্য আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদী)-ও টুইট করেননি।

কেন্দ্রকে নিশানা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ইতিমধ্যে বলেছেন, ‘মণিপুরে হিংসা ম্যানমেড’। । তাঁর প্রশ্ন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারত জ্বলছে। আমরা উদ্বিগ্ন। রাজনীতি আগে না কি মানুষের জীবন’? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় আসছেন ভাল কথা, কিন্তু মণিপুরে যাচ্ছেন না কেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলায় না এসে মণিপুরে যাওয়া উচিত’। শুধু তাই নয়, পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে কন্ট্রোলরুমও খোলা হয়েছে নবান্নে। আটকে পড়াদের ফিরিয়ে আনতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।

মণিপুরে অশান্তির মূলে

মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত করার দাবিকে ঘিরেই অশান্তির সূত্রপাত মণিপুরে। মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতেই ‘উপজাতি সংহতি মিছিল’ বার করে ছাত্র সংগঠন এটিএসইউএম। গত মাসে এই মর্মে রায় শোনায় মণিপুর হাইকোর্টও। সেই রায় ঘিরে ক্রমশ তেতে উঠছিল পরিস্থিতি। সংঘাত পরিস্থিত তৈরি হয় উপত্যকার ভবঘুরে মেইতেই সম্প্রদায় এবং রাজ্যের পাহাড়ি এলাকার উপজাতিদের মধ্যে। এই সংহতি মিছিলকে ঘিরেই অশান্তি বাঁধে।

মণিপুর সরকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানিয়েছে যে ৩ মে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে যে ৬৬টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে ৪১টি মৃত্যু হিংসার ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত। যদিও বেসরকারি সূত্রে দাবি, শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। রাজ্য জুড়ে হিংসার ঘটনায় ২১৬টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘ভুল’ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল! তবে উদ্ধবকে পুনর্বহাল নয়, মুখ্যমন্ত্রী থাকছেন শিন্ডেই, বলল সুপ্রিম কোর্ট

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version