শ্যাম-কূল দুই রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। মহাত্মা গান্ধীর ১৫৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই দিনে তিনি প্রশংসা করলেন শতবর্ষে পদার্পণ করা আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ)-এরও, যা বিজেপির মূল সংগঠন হিসেবে পরিচিত।
মোদী এক্স (X)-এ লিখেছেন, “গান্ধীজয়ন্তী প্রিয় বাপুর অসাধারণ জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। তাঁর আদর্শ মানব ইতিহাসের গতিপথ পাল্টে দিয়েছিল। তিনি দেখিয়েছিলেন কীভাবে সাহস আর সরলতা পরিবর্তনের শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। সেবা ও সহমর্মিতার শক্তিকে তিনি মানুষের ক্ষমতায়নের মূল মাধ্যম হিসেবে দেখেছিলেন। আমরা বিকশিত ভারতের পথে তাঁর আদর্শ মেনে চলতে থাকব।”
আরএসএসের শতবর্ষে মোদীর প্রশংসা
এর আগের দিনই মোদী আরএসএসের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পরও সংঘকে দমন করার চেষ্টা হয়েছিল। গুরুজি (এম এস গোলওয়ালকর)-কে গান্ধীজীর হত্যাকাণ্ডে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছিল এবং তাঁকে জেলে পাঠানো হয়েছিল।”
ইতিহাসে সংঘ ও গান্ধীর সম্পর্ক
মহাত্মা গান্ধী ও আরএসএসের সম্পর্ক সবসময় বিতর্কিত ছিল। সমালোচকেরা বহুবার অভিযোগ করেছেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে আরএসএস সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়নি।
১৯৪৮ সালে গান্ধীজীর হত্যার পর মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আরএসএস নিষিদ্ধ করার সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশে ঘৃণা ও সহিংসতার শক্তিকে উৎখাত করা জরুরি। স্বাধীনতাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে যারা, তাদের কার্যকলাপ ভারত সরকারের কাছে অগ্রহণযোগ্য।”
বিতর্ক ও সমালোচনা
গান্ধীজীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসে ছিলেন দক্ষিণপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী। মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে আজও তাঁর নামে একটি মন্দির রয়েছে। এ নিয়ে বারবার সমালোচনা হয়েছে বিজেপিকে ঘিরে।
এমনকি বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর একাধিকবার লোকসভায় গডসেকে “দেশভক্ত” বলেছিলেন, যার জন্য দল তাঁকে তিরস্কার করেছিল।
মহাত্মা গান্ধীর জন্মজয়ন্তীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং একইসঙ্গে আরএসএসের শতবর্ষে সংঘের প্রশংসা করায় রাজনৈতিক মহলে নতুন করে রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার ইন্ধন যুগিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।