মুম্বই পুলিশ এক বড় ধরনের সন্ত্রাস হুমকি ছাড়ানোর অভিযোগে নয়ডা থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্তের নাম অশ্বিনী কুমার (৫১)। তিনি বিহারের পাটনার পাটলিপুত্র এলাকার বাসিন্দা হলেও গত পাঁচ বছর ধরে নয়ডার সেক্টর ৭৯-এ বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করছিলেন।
কে এই অশ্বিনীকুমার
অশ্বিনী কুমার পেশায় জ্যোতিষী ও বাস্তু পরামর্শদাতা। তাঁর বাবা সুরেশ কুমার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষা দফতরের কর্মী এবং মা প্রভাবতী গৃহিণী। অশ্বিনী স্নাতকোত্তর হলেও ব্যক্তিগত জীবনে নানা সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং আর্থিক বিবাদের ইতিহাস রয়েছে। ২০২৩ সালে বিহারের ফুলওয়ারি শরিফ থানায় তাঁর বন্ধু ফিরোজ একটি মামলা দায়ের করেছিলেন, যার ফলে তাঁকে তিন মাস জেলে কাটাতে হয়।
হুমকি বার্তা
পুলিশ জানিয়েছে, অশ্বিনী নাকি পুরনো শত্রু ফিরোজকে ফাঁসাতে তাঁর নামে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠান। সেই বার্তায় দাবি করা হয়—
- মুম্বই জুড়ে ৩৪টি গাড়িতে মানব বোমা পুঁতে রাখা হয়েছে।
- ১৪ জন পাকিস্তানি জঙ্গি ভারতে প্রবেশ করেছে।
- হামলায় ব্যবহার হবে প্রায় ৪০০ কেজি আরডিএক্স।
- সংগঠনের নাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘লস্কর-এ-জিহাদি’।
- বার্তায় হিন্দুদের নিশ্চিহ্ন করার হুমকিও দেওয়া হয়।
বার্তাটি পুলিশ কন্ট্রোল রুম এবং ট্রাফিক পুলিশ উভয়ের কাছেই পৌঁছায়। মুহূর্তেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়াকড়ি করা হয় এবং গোটা শহরে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়।
গ্রেফতার ও জব্দ সামগ্রী
অভিযুক্তকে গ্রেফতারের সময় পুলিশ তাঁর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে—
- ৭টি মোবাইল ফোন
- ৩টি সিম কার্ড
- ৬টি মেমোরি কার্ড হোল্ডার
- একটি এক্সটার্নাল সিম স্লট
- ২টি ডিজিটাল কার্ড ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম
মামলা
ঘটনায় মুম্বই পুলিশের তরফে ক্রাইম নম্বর ৩৮১/২৫ নথিভুক্ত হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৯৬(১)(এ)(বি), ৩৫১(২), ৩৫১(৩) ও ৩৫১(৪) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
পুলিশের বিবৃতি
মুম্বই পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “শহর জুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মুম্বই পুলিশ সতর্ক এবং কোনও আশঙ্কা হলে নাগরিকদের তাৎক্ষণিক জানাতে অনুরোধ করা হচ্ছে।”
এই ঘটনার জেরে গণেশ বিসর্জনের আগে থেকেই মহারাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গোয়ালন্দে মৃত ধর্মগুরুর দেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিল মৌলবাদীরা, দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়