নবরাত্রির প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হচ্ছে জিএসটি ২.০ সংস্কার। একে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ‘জিএসটি বচত উৎসব’। এই সংস্কারের ফলে সাধারণ মানুষের সঞ্চয় বাড়বে, পছন্দের জিনিস কেনা হবে আরও সহজ।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, নবরাত্রির প্রথম দিন থেকেই আত্মনির্ভর ভারতের পথে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশ। তিনি বলেন, “এই সংস্কার ভারতের প্রবৃদ্ধির গতি আরও বাড়াবে, ‘Ease of Doing Business’ সহজ করবে, নতুন বিনিয়োগ আনবে এবং প্রতিটি রাজ্যকে উন্নয়নের সমান অংশীদার করবে।”
মোদী স্মরণ করান, ২০১৭ সালে জিএসটির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। করজটিলতার কারণে এক সময় ব্যাঙ্গালুরু থেকে হায়দরাবাদে পণ্য পাঠানো কঠিন ছিল, অথচ বিদেশে পাঠানো সহজ হত— সেই অবস্থা থেকে আজকের পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য।
তিনি জানান, গত ১১ বছরে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের সীমা পেরিয়ে গিয়েছেন এবং নতুন ‘নিও-মিডল ক্লাস’ তৈরি হয়েছে। তাঁদের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এনেছে করছাড়। এ বছর ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর আয়করের ছাড় দেওয়া হয়েছে। এবার জিএসটি হ্রাস সেই সুবিধা আরও বাড়িয়ে দেবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “দেশে যা প্রয়োজন, তা দেশের মধ্যেই তৈরি হওয়া উচিত। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রকে (MSME) বিশ্বমানের করতে হবে। বিদেশি জিনিসের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে।”
রাজ্যগুলির উদ্দেশে তাঁর বার্তা, শিল্পের পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং বিনিয়োগের সুযোগ বাড়াতে হবে। মোদীর দাবি, আয়কর ছাড় এবং জিএসটি সংস্কার মিলিয়ে এক বছরে দেশবাসীর সাশ্রয় হবে ২.৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
অতীতে নোটবন্দি থেকে শুরু করে লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত এসেছে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের মঞ্চ থেকে। এবারও জিএসটি সংস্কার নিয়ে তাঁর বার্তা ঘিরে আলোড়ন তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মূল ৫ বার্তা
- জিএসটি সাশ্রয় উৎসবের সূচনা
– ২২ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হচ্ছে জিএসটি ২.০, দাম কমবে বহু পণ্যের, সঞ্চয় বাড়বে সাধারণ মানুষের। - আত্মনির্ভর ভারতের পথে পদক্ষেপ
– নবরাত্রির প্রথম দিন থেকেই শুরু হচ্ছে নতুন অর্থনৈতিক যাত্রা, ‘Ease of Doing Business’ সহজ হবে, বিনিয়োগ বাড়বে। - মধ্যবিত্ত ও নিও-মিডল ক্লাসের সুবিধা
– আয়কর ছাড়ের পাশাপাশি জিএসটি হ্রাসে সাশ্রয় বাড়বে, স্বপ্নপূরণে সহায়ক হবে। - ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রকে উৎসাহ
– MSME খাতকে বিশ্বমানের করতে হবে, দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে, বিদেশি পণ্যের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। - রাজ্যগুলির উদ্দেশে বার্তা
– বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলুন, উৎপাদন বাড়ান, উন্নয়নে রাজ্যগুলিও সমান অংশীদার হোক।