Home খবর দেশ চিনে বেড়েছে ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’-র প্রকোপ, কেন্দ্রের নির্দেশের পর সতর্ক একাধিক রাজ্য

চিনে বেড়েছে ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’-র প্রকোপ, কেন্দ্রের নির্দেশের পর সতর্ক একাধিক রাজ্য

0
চিনে শিশুদের মধ্যে বেড়েছে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ। প্রতীকী ছবি রয়টার্সের সৌজন্যে

কয়েক মাস আগে করোনা মহামারি থেকে স্বস্তি পেয়েছে গোটা বিশ্ব। এখন আবারও নতুন এক রোগ কড়া নাড়ছে প্রতিবেশী দেশ চিনে। উত্তর চিনে ছড়িয়ে পড়া এই শিশুদের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-ও চিনের এই রোগের ব্যাপারে কঠোর হয়েছে এবং পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে।

কেন ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’

চিনের স্বাস্থ্য বিভাগের মতে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া এই রোগের নাম নিউমোনিয়া। তবে এটা সাধারণ নিউমোনিয়ার মতো নয়। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে চিনের হাসপাতালগুলিতে। নতুন এই ভাইরাসটিকে ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া ভাইরাস’ বলা হচ্ছে, কারণ এর কিছু লক্ষণ সাধারণ নিউমোনিয়ার মতো এবং কিছু ভিন্ন।

চিকিৎসকদের মতে, সাধারণ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা কফ-সহ কাশি, উচ্চ জ্বর এবং ফুসফুসে ফোলা (চায়না নিউমোনিয়া ভাইরাসের লক্ষণ) অভিযোগ করে। কিন্তু চিনের এই রহস্যময় নিউমোনিয়ায় শিশুদের মধ্যে কফ ছাড়াই কাশির পাশাপাশি প্রচণ্ড জ্বর ও ফুসফুসে ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

সতর্ক ভারত সরকার

চিনে, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে শ্বাসযন্ত্রের রোগের দ্রুত বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে প্রস্তুতি পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুসরণ করে, রাজস্থান, গুজরাত, উত্তরাখণ্ড, কর্নাটক, হরিয়ানা এবং তামিলনাড়ু-সহ ছ’টি রাজ্য নিজেদের স্বাস্থ্যপরিষেবা সংক্রান্ত বিভাগগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছে। নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ।

কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, নিবিড় ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ চলছে, কোনো ভাবে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে কোভিডের সময় নেওয়া সংশোধিত নজরদারি কৌশল প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নিজেদের জনস্বাস্থ্য এবং হাসপাতালের প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থাগুলির অবিলম্বে মূল্যায়ন করার জন্য অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। বিশেষত মানবসম্পদ, হাসপাতালের বেড, প্রয়োজনীয় ওষুধ, মেডিক্যাল অক্সিজেন, অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই), টেস্টিং কিট এবং হাসপাতালের রিএজেন্টের জোগান নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গের হিসাব সরকারি পোর্টালে নিয়মিত আপলোড করতে হবে। গুরুতর শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে সেই রোগীর কফ, থুতুর নমুনা গবেষণাগারে পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগটি শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী মহিলা, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের এবং স্টেরয়েডের মতো দীর্ঘমেয়াদী ওষুধ সেবনকারী ব্যক্তিদের জন্য বেশি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। পরিস্থিতি তেমন হলে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।

চিন জানিয়েছে, চেনা জীবাণুর কারণেই শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া ছড়িয়েছে। মাইক্রোপ্লাজমা নিউমোনিয়া মূলত এর জন্য দায়ী। এই ভাইরাসের কারণে বাচ্চাদের সর্দি হয়। তবে তুলনামূলক কমবয়সি শিশুদের গুরুতর সমস্যা হতে পারে।

সম্প্রতি এইমস-এর মা ও শিশু ব্লকের প্রধান ডা. এসকে কাবরা বলেছেন যে, চিনে এখন পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং নিউমোনিয়ার যে প্রকোপ দেখা গিয়েছে, সেখানে কোনও নতুন বা অন্য ধরনের ভাইরাস মেলেনি। এটা অক্টোবর-নভেম্বর মাসের সাধারণ ঘটনা বলা যায়। তবে এটি কোভিডের মতো মহামারির কারণ হবে কিনা সে বিষয়ে এখনই কিছু নিশ্চিত করে বলতে নারাজ তিনি। এখনও পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা নেই বলেই মত ডা. কাবরার।

আরও পড়ুন:‘ইঁদুর-গর্ত’ প্রক্রিয়ায় উদ্ধার করা হল আটকে থাকা শ্রমিকদের, জেনে নিন কী সেই প্রক্রিয়া

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version