টাকা লাগান। টাকা কামান। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও এমন অফারের ছড়াছড়ি। ফাঁদে পা দিয়ে একটু অসতর্ক হলেই সর্বস্বান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দিয়ে এমনই একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিয়ে কোটি টাকারও বেশি হারালেন এক অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মচারী।
সময়ের সঙ্গেই প্রতিনিয়ত ভোল বদলাচ্ছে সাইবার অপরাধ। স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করলে উচ্চ হারে রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। আর সেই প্রলোভনে ভুলেই সাইবার জালিয়াতির শিকার ওই ৬১ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মচারী। জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ তিনি প্রতারকদের খপ্পরে পড়েন। আর শেষমেশ এক কোটি টাকারও বেশি হারাতে হল তাঁকে।
কী ভাবে ঘটল কেলেঙ্কারি?
অভিযোগকারী ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন, এ বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফেসবুকে শেয়ার ট্রেডিংয়ের একটি বিজ্ঞাপন দেখেন তিনি। ওই বিজ্ঞাপনে একটি হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্ক দেওয়া ছিল। বলা হয়েছিল, ওই লিঙ্কে ক্লিক করলে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (বিএসই) শেয়ার এবং আইপিও কেনার পরামর্শ পাওয়া যাবে।
এর পর সঙ্গীতা কুমারী নামে এক মহিলা যোগাযোগ করেন প্রতারিত ব্যক্তির সঙ্গে। ওই মহিলার তাঁকে একটি ভিআইপি গ্রুপে যোগদান করান। বলা হয়, আন্তর্জাতিক ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়েছে, এর জন্য আধার কার্ডের বিশদ বিবরণও চেয়ে নেওয়া হয়।
এর পর প্রতারিত ব্যক্তির অ্যান্ড্রয়েড ফোনে একটি ইনভাইট কোড লিঙ্ক পাঠানো হয়। সেটিতে ক্লিক করে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করার পরামর্শ দেওয়া হলে, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মচারী নির্দেশ মতোই ওই অ্যাপ ডাউনলোড করতে যান। সেসময় একটি শেয়ার ট্রেডিং ফার্মের ওয়েবপেজ খুলে যায়। সেটি পূরণ করেন প্রতারিত ব্যক্তি।
এর পর মার্চ মাসে, ওই অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মচারীকে কর বাবদ ৩২ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়েছিল। তার পরে আবারও ৯৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। প্রতারিত ব্যক্তি সেসময় সঙ্গীতা কুমারী নামে ওই মহিলার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি বলেন, তাঁর লাভের টাকা থেকেই কর কেটে নেওয়া হোক। কিন্তু শোনামাত্রই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন সঙ্গীতা।
এর পরে প্রতারিত ব্যক্তি ৩০ লক্ষ টাকা স্থানান্তর করেন। পাশাপাশি, সঙ্গীতাকে জানান, তিনি নিজের সমস্ত বিনিয়োগই তুলে নিতে চান। কিন্তু তার পরেও সার্ভিস চার্জ হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে অভিযুক্তরা। এর পর আর কিছু জানা যায়নি। অভিযোগের উপর ভিত্তি করে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।