Home খবর দেশ রোহিঙ্গারা শরণার্থী না অবৈধ অনুপ্রবেশকারী? প্রথমে সেই প্রশ্নের জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট

রোহিঙ্গারা শরণার্থী না অবৈধ অনুপ্রবেশকারী? প্রথমে সেই প্রশ্নের জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রিম কোর্ট রোহিঙ্গাদের শরণার্থী না অবৈধ অনুপ্রবেশকারী—এই প্রশ্নের মীমাংসাকেই প্রধান বলে চিহ্নিত করল। আদালতের মতে, এই সিদ্ধান্তেই নির্ভর করবে ভবিষ্যতের সমস্ত রায়।

Supreme Court on citizenship proof

রোহিঙ্গা সংকট ঘিরে একাধিক মামলা চলাকালীন গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করল দেশের শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানাল, এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—রোহিঙ্গারা আদৌ শরণার্থী, না কি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী? এই প্রশ্নের মীমাংসা না করে পরবর্তী বিষয়ে এগনো যাবে না বলেই মত বিচারপতিদের।

বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চ স্পষ্ট করে দিয়েছে, একবার এই শ্রেণিবিভাগ নির্ধারিত হলে তবেই রোহিঙ্গাদের অধিকার, সুযোগসুবিধা এবং রাষ্ট্রের করণীয় নিয়ে পরবর্তী আইনি বিশ্লেষণ সম্ভব। আদালত এ-ও জানিয়েছে, শুধু একটি নীতিগত কাঠামো স্থির করে দিতে পারে আদালত, তবে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা সংক্রান্ত মামলাগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করেছে। প্রথম ভাগে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত প্রশ্ন, দ্বিতীয় ভাগে তাঁদের মানবিক ও সামাজিক অধিকার সংক্রান্ত প্রশ্ন এবং তৃতীয় একটি মামলাকে আদালত আলাদা বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত বলেই গণ্য করেছে। এখন থেকে প্রতি বুধবার এই মামলাগুলির শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে।

বিচারপতি কান্ত বলেন, “প্রথম প্রশ্নটি অত্যন্ত সহজ—তারা শরণার্থী, না কি অনুপ্রবেশকারী?” যদি তারা শরণার্থী বলে গণ্য হন, তাহলে আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইন অনুসারে কিছু অধিকার তাদের প্রাপ্য হতে পারে। অন্যদিকে, যদি তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তাও নির্ধারণ করতে হবে রাষ্ট্রকে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, একটি বড় প্রশ্ন হল—অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হলেও কি কাউকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখা যায়? না কি আদালতের থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পাওয়ার অধিকার তাদের থাকা উচিত?

আলোচনায় উঠে এসেছে আশ্রয় শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের পানীয় জল, নিকাশি ও শিক্ষার মতো মৌলিক পরিষেবার প্রাপ্যতা নিয়েও প্রশ্ন। সুপ্রিম কোর্ট চায়, এসব বিষয়েও সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হোক।

প্রসঙ্গত, এর আগেও রোহিঙ্গা বিতাড়ন ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের কড়া মন্তব্য নজর কেড়েছিল। গত ১৬ মে আদালত মামলাকারীদের কিছু “অবিশ্বাস্য ও বিভ্রান্তিকর” দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং কঠোর ভাষায় সতর্ক করে দেয়। ৮ মে-র এক পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছিল, ভারতীয় আইন অনুসারে রোহিঙ্গারা যদি বিদেশি বলে চিহ্নিত হন, তবে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো যাবে।

সর্বোপরি, সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশ ঠিক করবে বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের।

আরও যে খবর পড়তে পারেন

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version