Home খবর দেশ আর নেই পট্টিবাঁধা চোখ, সুপ্রিম কোর্টে বসানো হল নতুন ন্যায়ের মূর্তি, হাতে...

আর নেই পট্টিবাঁধা চোখ, সুপ্রিম কোর্টে বসানো হল নতুন ন্যায়ের মূর্তি, হাতে সংবিধান

ডানদিকে বর্তমান মূর্তি, বামদিকে আগের

দেশের শীর্ষ আদালতে ন্যায়ের প্রতীক হিসাবে দীর্ঘ দিন ধরে প্রচলিত মূর্তি অবশেষে বদলে গেল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টে বসানো হয়েছে নতুন ন্যায়ের মূর্তি। এই নতুন মূর্তির বিশেষত্ব হলো, এর চোখে পট্টি নেই। মূর্তির এক হাতে রয়েছে ভারতের সংবিধান, অন্য হাতে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসাবে দাঁড়িপাল্লা।

পুরনো মূর্তিতে যে কালো কাপড় দিয়ে চোখ বাঁধা থাকত, তা সরে গিয়েছে। পূর্বের মূর্তির চোখের পট্টি একটি বার্তা দিত যে, আইনের চোখে সকলেই সমান। তবে নতুন মূর্তির মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এমন একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, আইন অন্ধ নয়, আদালত সকলকেই সমানভাবে দেখে বিচার করে। শ্বেতবর্ণের এই নতুন নারীমূর্তিটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের লাইব্রেরিতে স্থাপন করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তন ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় ঔপনিবেশিক রীতি থেকে বেরিয়ে আসার একটি প্রচেষ্টা। তরোয়ালের পরিবর্তে সংবিধান রাখা হয়েছে, যা প্রধান বিচারপতির মতে, আইনের রায় হিংসার ওপর ভিত্তি করে হয় না, বরং সংবিধানের আলোকে হয়। এর ফলে নতুন মূর্তির হাতে তরোয়াল না রেখে ভারতের সংবিধান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই নতুন মূর্তির বিষয়ে আইনজীবী অরুন্ধতী প্রসাদ জানিয়েছেন, “প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আইনের চোখ অন্ধ নয়, বরং সঠিকভাবে বিচার করার ক্ষমতা রয়েছে। সংবিধানকে সামনে রেখে আদালত যে কাজ করছে, সেটাই এখানে প্রতিফলিত হয়েছে।”

প্রতিমূর্তির পরিবর্তন কেন?

সুপ্রিম কোর্টে ন্যায়ের প্রতিমূর্তির পরিবর্তনের মূল কারণ হলো ঔপনিবেশিক রীতির প্রভাব থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক ও ভারতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি বার্তা দেওয়া। পুরনো মূর্তির চোখে পট্টি বাঁধা থাকত, যা প্রতীকীভাবে বুঝাত যে আইনের চোখে সবাই সমান, বিচার অন্ধভাবে করা হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নির্দেশে স্থাপিত নতুন মূর্তির চোখে কোনও পট্টি নেই, যা এই ধারণা বদলে নতুন বার্তা দেয় যে, আইন অন্ধ নয়— আদালত সকলকে সজাগভাবে দেখে বিচার করে।

এছাড়া পুরনো মূর্তির হাতে থাকা তরোয়ালও প্রতীকীভাবে আইনগত শাস্তির ক্ষমতার নির্দেশক ছিল, যা অনেক সময় হিংসার প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়। প্রধান বিচারপতি তরোয়ালের পরিবর্তে সংবিধানকে প্রতিস্থাপন করেছেন, যা শান্তি ও সংবিধানের নিয়মাবলীর ভিত্তিতে বিচার করার প্রতীক।

এই পরিবর্তনের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থায় শক্তি বা হিংসার পরিবর্তে সংবিধান এবং সুষম ন্যায়ের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যা আধুনিক ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version