নয়াদিল্লি: একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে তফসিলি জাতির (এসসি) উপ-শ্রেণিবিভাগের বিষয়ে পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট । এই মামলার পর্যালোচনা আবেদনে বলা হয়েছিল যে, উপ-শ্রেণিবিভাগের অনুমতি দেওয়ার পূর্বের রায়ে ভুল ছিল। তবে শুক্রবার সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, তাদের আগের রায়ে কোনও ত্রুটি নেই।
আদালত জানিয়েছে, “পর্যালোচনা আবেদনের নথি পর্যালোচনা করে কোনও স্পষ্ট ভুল খুঁজে পাওয়া যায়নি। কোনও পর্যালোচনার প্রয়োজন নেই। তাই পর্যালোচনা আবেদনগুলো খারিজ করা হল।”
এই মামলাটি বিস্তৃতভাবে আলোচনায় আসে যখন বঞ্চিত বহুজন আগাড়ির (ভিবিএ) প্রধান প্রকাশ অম্বেডকর গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করেন যে, তাঁর সংগঠন সুপ্রিম কোর্টের তফসিলি জাতির উপ-শ্রেণিবিভাগের অনুমোদন সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একটি পর্যালোচনা আবেদন দাখিল করেছে। তাঁর মতে, এই রায়টি তফসিলি জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণিগুলোর উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
গত মাসে সুপ্রিম কোর্টের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, রাজ্য সরকারগুলোকে তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতির মধ্যে আরও পিছিয়ে থাকা শ্রেণিগুলোকে উন্নীত করার জন্য সংরক্ষিত শ্রেণির মধ্যে কোটা বরাদ্দ করার ক্ষমতা দেওয়া যেতে পারে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ৬:১ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এই রায় দেয়। রায়ে বলা হয়, রাজ্যগুলো তফসিলি জাতির মধ্যে আরও পিছিয়ে পড়া শ্রেণিগুলোকে চিহ্নিত করতে পারে এবং তাদের উন্নতির জন্য আলাদা কোটা বরাদ্দ করতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি তফসিলি জাতির মধ্যে আরও বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণিগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
তবে, আদালত কিছু শর্ত আরোপ করেছে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে, উপ-শ্রেণিবিভাগ করার সময় রাজ্যগুলো কোনও নির্দিষ্ট উপ-শ্রেণির জন্য ১০০% সংরক্ষণ বরাদ্দ করতে পারবে না। এছাড়াও, উপ-শ্রেণিবিভাগের সিদ্ধান্তের পেছনে অবশ্যই বাস্তবভিত্তিক তথ্য থাকা উচিত যা দেখাবে যে, সেই উপ-শ্রেণিটির পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব নেই এবং তাদের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায়টি ভারতের সংরক্ষণ নীতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ এটি তফসিলি জাতি ও উপজাতির মধ্যে আরও পিছিয়ে থাকা শ্রেণিগুলোর উন্নয়নের জন্য রাজ্যগুলিকে ক্ষমতা দেয়। একইসঙ্গে এটি নিশ্চিত করে যে, সংরক্ষণের ব্যবস্থাটি আরও ন্যায়সঙ্গত ও কার্যকরভাবে পরিচালিত হবে।