চেন্নাই: লোকসভা আসন পুনর্বিন্যাসের বিরুদ্ধে ডিএমকে প্রধান এবং তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের ডাকা যৌথ বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের অনুপস্থিতি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শনিবার চেন্নাইয়ে আয়োজিত এই বৈঠকে তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা যোগ দিলেও, তৃণমূল কংগ্রেস এতে যোগ দেয়নি। সূত্রের খবর, তৃণমূল আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতি গ্রহণ করে আসন পুনর্বিন্যাস ইস্যু থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে।
তৃণমূলের গুরুত্ব এখন ভুয়ো ভোটার বিতর্ক
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রের মতে, আসন পুনর্বিন্যাসের তুলনায় ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড এবং ভুয়ো ভোটার ইস্যুকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের প্রধান লক্ষ্য ভোট সংক্রান্ত অনিয়ম রোধ করা। এই কারণেই আসন পুনর্বিন্যাসের মতো জাতীয় ইস্যু থেকে আপাতত নিজেদের সরিয়ে রেখেছে ঘাসফুল শিবির।
স্ট্যালিনের আমন্ত্রণ, তবুও বৈঠকে নেই তৃণমূল
সম্প্রতি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েক জন বিরোধী নেতাকে চিঠি দিয়ে আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি চেন্নাইয়ের বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য তৃণমূল নেত্রীকে আমন্ত্রণও জানান। কিন্তু শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ায় তাঁর পক্ষে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকা সম্ভব হয়নি।
কে কে ছিলেন বৈঠকে?
চেন্নাইয়ে আয়োজিত এই বৈঠকে যোগ দেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিরোমণি অকালি দল, বিজু জনতা দল এবং ভারত রাষ্ট্র সমিতির প্রতিনিধিরা।
বিজেপির কটাক্ষ
এ দিকে, বিজেপি এই বৈঠককে “দুর্নীতি লুকানোর সভা” বলে কটাক্ষ করেছে। বিজেপি নেত্রী তামিলিসাই সৌন্দররাজন বলেন, “লোকসভা আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তই এখনো কেন্দ্রের তরফে নেওয়া হয়নি। অথচ ডিএমকে এবং তার সহযোগীরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।”
স্ট্যালিনের বার্তা
এম কে স্ট্যালিন বৈঠকের আগে বলেন, “এটি ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর জন্য ঐতিহাসিক দিন।” তিনি বলেন, “এই বৈঠক শুধু একটি সভা নয়, এটি একটি আন্দোলনের সূচনা, যা দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে।”
২৫ বছরের জন্য স্থগিতের ডাক
২৫ বছরের জন্য আসন পুনর্বিন্যাস স্থগিত রাখার দাবি তুললেন এমকে স্ট্যালিনেরা। শনিবার চেন্নাইয়ের বৈঠকে চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং এক রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে।
তবে, তৃণমূলের এই বৈঠকে অনুপস্থিতি রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইস্যুর দিকে মনোনিবেশ করতে চাইছে তৃণমূল, তাই জাতীয় পর্যায়ের এই আলোচনা থেকে দূরে থাকছে।