Home খবর দেশ ‘১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল: শাহকে ১৫ দিনের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন অভিষেক

‘১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল: শাহকে ১৫ দিনের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন অভিষেক

abhishek banerjee press conference

লোকসভায় ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল ঘিরে তীব্র রাজনৈতিক অস্থিরতা। বুধবার বিল পেশের সময় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কংগ্রেস। সেই প্রসঙ্গ টেনে দলটির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বাংলার তৃণমূল।

অভিষেকের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সাংসদেরা শুরু থেকেই ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ করেছেন। এর ফলে লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করতে বাধ্য হন স্পিকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজের আসনে বসতে পারেননি। চতুর্থ সারিতে বসে ২০ জন মার্শালের নিরাপত্তায় বিল পেশ করতে হয়েছে তাঁকে।’’

কী বলছে বিল

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার যে বিল পেশ করেছেন, তাতে প্রস্তাব করা হয়েছে— প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা কেন্দ্র-রাজ্যের যে কোনও মন্ত্রী গুরুতর অপরাধে টানা ৩০ দিনের জন্য হেফাজতে থাকলে মন্ত্রিত্ব চলে যাবে। পাঁচ বছর বা তার বেশি সাজা হতে পারে, এমন অপরাধগুলিকেই ধরা হয়েছে ‘গুরুতর অপরাধ’ হিসেবে।

বিরোধীদের অভিযোগ, এই বিল আসলে বিরোধী শাসিত রাজ্যে ইডি ও সিবিআইয়ের ব্যবহার বাড়ানোর হাতিয়ার। প্রমাণিত অপরাধের আগেই গ্রেফতার হওয়া মন্ত্রীদের পদত্যাগে বাধ্য করার চেষ্টা চলছে বলেও মনে করছে বিরোধী শিবির।

অভিষেকের পাল্টা প্রস্তাব

অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, ‘‘৩০ দিন নয়, গ্রেফতারের পর ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। তা না হলে তদন্তকারী অফিসার ও সংস্থার প্রধানকে দ্বিগুণ জেল খাটতে হবে। এমন বিল এলে তৃণমূল সমর্থন করবে।’’
তিনি আরও দাবি করেন, গত ১০ বছরে ইডি ৫,৮৯২টি মামলায় তদন্ত করলেও মাত্র ৮টিতে দোষ প্রমাণ হয়েছে। অর্থাৎ, ‘‘৯৯ শতাংশ মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে,’’ বলে অভিযোগ অভিষেকের।

‘বাংলার শক্তি দেখল বিজেপি’

লোকসভায় বিজেপি বাংলায় ১২টি আসন জিতেছে, আর তৃণমূলের দখলে রয়েছে ২৯টি আসন। সেই প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক বলেন, ‘‘যারা এত হম্বিতম্বি করে, তারা বাংলার শক্তি দেখল। যদি উল্টো হত, বিজেপি ২৯টি আসন আর তৃণমূল ১২টি জিতত, তবে এই বিল আজই পাশ হয়ে যেত।’’

রাজনৈতিক তাৎপর্য

আগামী বছরই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন। তাই অভিষেকের বক্তব্যকে অনেকেই দেখছেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ভেতর থেকেও তৃণমূলের শক্তি ও আলাদা অবস্থান তুলে ধরার কৌশল হিসেবে।
অভিষেকের পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘সারা দেশ দেখল, অসাংবিধানিক বিল আনতে গিয়ে শাহ নিজের আসনে বসার সাহস দেখাতে পারেননি। ২০ জন মার্শালের নিরাপত্তায় তাঁকে চতুর্থ সারিতে যেতে হয়েছে।’’

অভিষেকের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি মানুষের সমস্যার কথা ভাবে না। শুধু ভাবে কী ভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা যায়। আদালতের কাজে হস্তক্ষেপ করে বিরোধী শূন্য দেশ গড়াই ওদের লক্ষ্য।’’

বিরোধী শিবিরের ধারণা, এই বিল কোনও দিন পাশ হবে না। কারণ সংবিধান সংশোধনের জন্য দুই কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, যা বিজেপির নাগালের বাইরে। তবে বিজেপি আসল সমস্যার থেকে নজর ঘোরাতেই বিলটি এনেছে বলে দাবি করছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন:

সুপ্রিম কোর্টে খারিজ ২৬ হাজার চাকরি বাতিল নিয়ে সব রিভিউ পিটিশন, পর্যবেক্ষণে কী বলল শীর্ষ আদালত?

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version