বেহালা পর্ণশ্রীতে পোষ্যদের উপর নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সিঁড়িতে পড়ে ছিল একাধিক বিড়ালছানার দেহ— কারও গলা কাটা, কারও দেহ দু’টুকরো! ঘরের বাইরে মিলেছে কুকুরছানার দেহও। পুলিশ ইতিমধ্যেই চারটি কুকুরছানা এবং তিনটি বিড়ালের দেহ বেলগাছিয়ায় ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দু’-তিন দিন আগে থেকেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ওই প্রাণীগুলি। তবে মৃত্যুর আসল কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই পেট ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিটি অন্যত্র থাকায় মৃতদেহগুলির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার গভীর রাতে বেহালার পর্ণশ্রীর সাগর মান্না রোডের একটি বাড়ি থেকে সাতটি পোষ্যের দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। তাই জোর করে ভিতরে ঢুকতেই সামনে আসে ভয়াবহ দৃশ্য। ওই বাড়িতেই চালানো হত ‘পজ হেভন ফাউন্ডেশন’ নামে পশু হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্র। ঘটনাস্থলে উপস্থিত চার যুবককে স্থানীয়রা বেধড়ক মারধর করেন। এরপর ওই আস্তানার মালিক অরুণিমা রায়ের বাড়িতে গিয়েও চড়াও হন উত্তেজিত জনতা। অভিযোগ, তাঁকেও হেনস্থা করা হয়। পরে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসীর দাবি, এখানে শুধু নির্যাতনই নয়, পশুর দেহাংশ এবং মাংস পাচারেরও যোগ থাকতে পারে। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক এবং ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এখনও বাড়িটিতে কুকুর-বিড়াল মিলিয়ে ২৬টি পোষ্য বন্দি রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রাণীগুলির দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্র। তিনি নিয়মিত খাবার পাঠাচ্ছেন। সঞ্চিতা বলেন, ‘‘আমি ওদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। নিজের বাড়িতে রাখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার বাড়িতেই ১১টি কুকুর রয়েছে। তাই সেটা সম্ভব হয়নি।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘‘যাঁরা পোষ্যগুলি ক্রেশে রেখেছিলেন, তাঁরা যদি না আসেন, তবে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।’’
এদিকে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, কত দিন এভাবে ওই প্রাণীগুলি গৃহবন্দি অবস্থায় থাকবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পরিষ্কার হবে বলে আশা করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
দুর্গাপুজোর আগেই কলকাতায় চালু হবে ৩ নতুন মেট্রো লাইন, কত মিনিট অন্তর পরিষেবা?