Home খবর দেশ আপাতত নিয়োগ নয়, সম্পত্তির অবস্থাও অপরিবর্তিত থাকবে, ওয়াকফ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আশ্বাস...

আপাতত নিয়োগ নয়, সম্পত্তির অবস্থাও অপরিবর্তিত থাকবে, ওয়াকফ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আশ্বাস কেন্দ্রের

সুপ্রিম কোর্ট

ওয়াক্‌ফ আইন সংশোধন নিয়ে চলমান বিতর্ক ও দেশজুড়ে বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে গুরুত্বপূর্ণ আশ্বাস দিল কেন্দ্র সরকার। আদালতকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত নতুন কোনও ওয়াক্‌ফ নিয়োগ হবে না এবং ওয়াক্‌ফ বোর্ডের দাবি করা কোনও সম্পত্তির অবস্থাও পরিবর্তন করা হবে না।

বিশেষ করে ‘ওয়াক্‌ফ বাই ইউজার’ অর্থাৎ দলিল ছাড়াও মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বা দাতব্য ব্যবহারের ভিত্তিতে যে সম্পত্তিগুলি ওয়াক্‌ফ হিসেবে দাবি করা হয়, সেই নিয়েও আপাতত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে আদালত স্পষ্ট করেছে, ‘‘আমরা বলছি না সব ওয়াক্‌ফ বাই ইউজার ভুল, কিন্তু উদ্বেগ আছে।’’

সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সম্প্রতি ওয়াক্‌ফ বোর্ডগুলির গঠনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন আইনে বোর্ডে অমুসলিম সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে, যা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না কেন্দ্রকে প্রশ্ন করেন, ‘‘যদি ওয়াক্‌ফ বোর্ডে অমুসলিমরা থাকতে পারেন, তবে কি হিন্দু এনডাওমেন্ট বোর্ডে মুসলমানরা থাকতে পারবেন?’’

সংশোধিত আইনের ৯ এবং ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ওয়াক্‌ফ কাউন্সিলে ২২ জনের মধ্যে মাত্র ৮ জন এবং রাজ্য বোর্ডে ১১ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জন মুসলিম সদস্য থাকতে পারবেন। এই নিয়েই আদালতে ওঠে তীব্র আপত্তি।

বৃহস্পতিবার আদালতে কেন্দ্রের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, সরকার এক সপ্তাহ সময় চায় যাতে সব মামলার জবাব দিতে পারে। এই সময়ে কোনও নিয়োগ বা সম্পত্তি সংক্রান্ত পরিবর্তন করা হবে না।

এদিন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, বহু মামলা জমা পড়লেও আপাতত মাত্র পাঁচটি রিট পিটিশনের শুনানি চলবে। বাকি মামলা ‘disposed of’ হিসেবে চিহ্নিত হবে। সরকারকে এক সপ্তাহ সময় দিয়ে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, তারপরে পাঁচ দিনের মধ্যে পিটিশনাররা নিজেদের জবাব দাখিল করবেন।

বুধবার আদালত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করতে চাইলেও কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার আরও সময় চাওয়ায় তা স্থগিত রাখা হয়। যদিও আদালত স্পষ্ট করে দেয়, সহিংসতা ঠেকাতেই এই স্থগিতাদেশ ভাবা হয়েছিল।

এই আইনবদলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস, আপ, ডিএমকে, সিপিআই-এর মতো বিরোধী দলগুলি মামলা করেছে। এমনকি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-ও আইনকে চ্যালেঞ্জ করেছে, যা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ সামনে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন।

জমিয়তে উলেমা-ই-হিন্দ, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড-সহ একাধিক ধর্মীয় সংগঠনও আইনের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। কেউ কেউ এই আইন বাতিল চাইলেও, কেউ এর উপর স্থগিতাদেশ দাবি করেছেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version