Homeখবরদেশশনিবার ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে ইতিহাস! মুক্তি পেল জুবিন গার্গের স্বপ্নের ছবি...

শনিবার ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে ইতিহাস! মুক্তি পেল জুবিন গার্গের স্বপ্নের ছবি ‘রৈ রৈ বিনালে’

শহরের বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে গানের সুর, মানুষের চোখে জ্বলছে আলো, আর আকাশে ঝুলছে এক নাম—জুবিন।

প্রকাশিত

অরূপ চক্রবর্তী, গুয়াহাটি: কখনও কখনও কোনো শিল্পী শুধুমাত্র মানুষ নন, হয়ে ওঠেন এক অনুভূতি, এক প্রতিধ্বনি। অসমিয়াদের প্রাণের শিল্পী, ‘প্রনর’ জুবিন গার্গ, তেমনই এক নাম। শনিবার সেই প্রতিধ্বনিই ফিরে এল পর্দায় —সুর, আবেগ আর অশ্রুভেজা ভালোবাসা নিয়ে, ‘রৈ রৈ বিনালে’ ছবির মাধ্যমে।

এ দিন যেন গোটা অসম থমকে গেছে এক স্বপ্নের সামনে। শহরের বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে গানের সুর, মানুষের চোখে জ্বলছে আলো, আর আকাশে ঝুলছে এক নাম—জুবিন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মুক্তি পেল তাঁর স্বপ্নের সৃষ্টি ‘রৈ রৈ বিনালে’, আর তার সঙ্গে সঙ্গে যেন নতুন করে জন্ম নিল অসমিয়াদের আবেগ, সংস্কৃতি ও সঙ্গীত।

ভোরের অন্ধকার তখনও কাটেনি। তবু বৃষ্টিভেজা রাস্তায় ছুটে এসেছে মানুষ—হাতে ছাতা, মনে আলো। কারণ এ দিন ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে গুয়াহাটির মেট্রিক্স সিনেমায় শুরু হল এক অনন্য ইতিহাসের অধ্যায়। অসমিয়া চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এই প্রথম, কোনো ছবির প্রদর্শনী শুরু হল এমন প্রভাতে, এমন আবেগে।

দর্শকরা বলছেন, “এই ছবির অপেক্ষায় ছিলাম দিনের পর দিন। আজ মনে হচ্ছে, যেন জুবিন দা আমাদের মাঝেই আছেন।” কারও চোখে জল, কারও মুখে হাসি—কিন্তু সবার বুকের ভিতর একটিই সুর বাজছে, ‘রৈ রৈ বিনালে…।’

প্রায় চল্লিশ দিন পার হয়ে গেছে তাঁকে না দেখে। কিন্তু শনিবার সেই অন্ধকারে আলো জ্বালল তাঁর সৃষ্টিই। পর্দায় যখন ভেসে উঠল তাঁর মুখ, হলের প্রতিটি কোণে তখন বেজে উঠল হাততালি আর কান্নার মিশ্র প্রতিধ্বনি।

গুয়াহাটির পাশাপাশি বেলতলা, ঢেকিয়াজুলি, ধুবড়ি, শিলচর—সবখানেই এ দিন উৎসবের আবহ। কিছু প্রেক্ষাগৃহে শিল্পীর স্মৃতিতে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে একটি আসন—নীরব ভালোবাসার প্রতীক হয়ে। যেন সেই শূন্য চেয়ারটিতেই বসে আছেন তিনি, মৃদু হেসে শুনছেন নিজের গানের প্রতিধ্বনি।

উল্লেখযোগ্য, ‘রৈ রৈ বিনালে’ অসম ও সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের ৯১টি এবং ভারতের অন্যান্য প্রদেশের আরও ৮৫টি প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির প্রথম দিনেই ছবিটি ছুঁয়ে ফেলেছে দর্শকের হৃদয়, সৃষ্টি করেছে নতুন রেকর্ড।

৯০ বছরের অসমিয়া চলচ্চিত্র শিল্পের ইতিহাসে ‘রৈ রৈ বিনালে’ কেবল একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি এক আবেগের নদী, এক ভাষাহীন কবিতা। যেখানে প্রতিটি দৃশ্য, প্রতিটি সুরে বেঁচে আছেন ‘প্রনর’ জুবিন গার্গ—অসমের আত্মা, ভালোবাসার প্রতীক, সঙ্গীতের চিরন্তন মানুষ।

আজ অসমের আকাশে তাই বাজছে একটাই সুর— “প্রনের জুবিন, তুমি আহিলা পুনর…।”

আরও পড়ুন

সুরের সীমানা নেই: জুবিন গার্গকে শ্রদ্ধা জানাতে সোনাপুরে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দল

আপনার প্রশ্ন, আমাদের উত্তর

সাম্প্রতিকতম

এআইএফএফ সুপার কাপ ২০২৫-২৬: গোলশূন্য ডার্বি, মোহনবাগানকে আটকে সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গল

ভুবনেশ্বর: শুক্রবার ভুবনেশ্বরে আয়োজিত এআইএফএফ সুপার কাপের গ্রুপ ‘এ’-এর শেষ ম্যাচে ঐতিহ্যবাহী কলকাতা ডার্বিতে...

অভিষেক শর্মার ৩৭ বলে ৬৮ কাজে দিল না, দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে ভারতকে মাত করল অস্ট্রেলিয়া

ভারত: ১২৫ (১৮.৪ ওভার) (অভিষেক শর্মা ৬৮, হর্ষিত রানা ৩৫, জোশ হ্যাজলউড ৩-১৩, নাথান...

এসআইআর আতঙ্কে জন্ম-মৃত্যু সার্টিফিকেট নেওয়ার ভিড়, হায়রানি রুখতে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুরসভা, আশ্বাস মেয়রের

এসআইআর আতঙ্কে জন্ম ও মৃত্যু সনদের জন্য ভিড় বাড়ছে কলকাতা পুরসভায়। মেয়র ফিরহাদ হাকিম আশ্বাস দিয়েছেন, পুরসভা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। তবে অভিযোগ উঠছে দালালচক্র ও অনলাইন চ্যাটবট পরিষেবার ধীরগতির বিরুদ্ধে।

নাথুলা-সহ ইন্দো-চিন সীমান্তে মরশুমের প্রথম তুষারপাত, সিকিমে লাল সতর্কতা জারি, পর্যটকদের ভ্রমণে মানা

নাথুলা, কাপুপ ও চাঙ্গু লেকে মৌসুমের প্রথম ভারী তুষারপাত। সিকিমে লাল সতর্কতা জারি করেছে আইএমডি। তুষার জমে যান চলাচলে বিপত্তি।

আরও পড়ুন

বিহার নির্বাচনের ইস্তাহার প্রকাশ এনডিএ-র, ১ কোটি চাকরি ও চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, আর কী প্রতিশ্রুতি?

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ প্রকাশ করল তাদের ইস্তাহার। এক কোটি চাকরি, চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সাতটি এক্সপ্রেসওয়ে, এবং এক কোটি ‘লক্ষপতি দিদি’-র প্রতিশ্রুতি। মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ জোর।

সুরের সীমানা নেই: জুবিন গার্গকে শ্রদ্ধা জানাতে সোনাপুরে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দল

প্রয়াত গায়ক জুবিন গার্গের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সোনাপুরে তাঁর দাহস্থলে এলেন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দল। উপ-উচ্চ কমিশনার প্রীতি রহমানের নেতৃত্বে দলটি ফুল অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। সঙ্গীতের সীমানা যে রাজনীতির ঊর্ধ্বে, তা আবারও প্রমাণিত হল।

মুম্বইয়ের স্টুডিয়োয় ২০ শিশুকে পণবন্দি করে খুনের হুমকি দেওয়া রোহিত আর্যকে? পুলিশের গুলিতে নিহত অপহরণকারী

মুম্বইয়ের পাওয়াই এলাকায় স্টুডিওতে ২০ জন শিশুকে জিম্মি করেন এক ব্যক্তি, রোহিত আর্য। এক ঘণ্টা টানা উদ্ধার অভিযানের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হলেও পরে মৃত্যু হয় তাঁর। সমস্ত শিশু নিরাপদে পরিবারের কাছে ফেরানো হয়েছে।