কলকাতা: শুক্রবার শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে আগামী ৫ আগস্ট বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করল বিজেপি।
কেন অভিযোগ দায়ের?
রবীন্দ্র সরোবর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শনিবার রবীন্দ্র সরোবর থানায় ইমেলের মাধ্যমে এফআইআর দায়ের করেন বিজেপি নেতা রাজর্ষি লাহিড়ি। দাবি করা হয়েছে, এ ধরনের কর্মসূচি প্ররোচনামূলক।
বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক প্রসঙ্গে বিজেপি নেতার অভিযোগ, “এই বক্তব্য শুধুমাত্র গণতন্ত্র বিরোধী নয়, আইনেরও লঙ্ঘন। ভারতের পবিত্র সংবিধানে দেশের প্রতিটি নাগরিককে স্বাধীনভাবে চলাফেরার করার মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত।”
কেন বাড়ি ঘেরাও?
শুক্রবার ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে অভিষেক ঘোষণা করেন, “আগামীদিনে বাংলার মানুষ দিল্লি গিয়ে নিজের অধিকার ছিনিয়ে আনবে। নিজের অধিকারের স্বার্থে লড়বে। আগামী ৫ আগস্ট শনিবার বিজেপির সমস্ত বুথ, অঞ্চল, ব্লক, জেলা থেকে রাজ্য শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ঘেরাও। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা গণঘেরাও। তবে বাড়িতে কোনো বৃদ্ধ মানুষ থাকলে তাঁকে ছেড়ে দেবেন। কিন্তু বিজেপি নেতা বাড়ি থেকে বেরোবেও না ঢুকবেও না। কিন্তু গায়ে হাত দেবেন না। গণঘেরাও কর্মসূচি হবে। তারপর দিল্লি ঘেরাও হবে। সর্বশক্তি লাগিয়ে দেব। ট্রেনে করে বুকে আশা বেঁধে দিল্লি চলো।”
অভিষেকের পরে মঞ্চে বক্তৃতা করেন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিষেক ঘোষিত কর্মসূচির কিছুটা সংশোধন করে বলেন, ‘‘অভিষেক ৫ আগস্ট একটা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কিন্তু আমি বলব, ওটা ব্লকে ব্লকে করা হোক। শান্তিপূর্ণ ঘেরাও করো। বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে। ভোটের সময় যেমন বুথের ১০০ মিটার দূরে জমায়েত করা যায়। যাতে বলতে না পারে আমাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে। বাংলাকে ভাতে মারা যাবে না। বাংলা অনেক শক্তিশালী মনে রাখবেন।’’
শুরু চাপানউতোর
অভিষেকের এই কর্মসূচিকে বিপজ্জনক বলে বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস এবং সিপিএমও। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, “বিরোধীদের বাড়ি ঘেরাও করা রাজনৈতিক সংস্কৃতি নয়।” পাশাপাশি কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমের কাছে এ প্রসঙ্গে বলেন, “বাড়ি ঘেরাওয়ের রাজনীতি শুরু হলে তৃণমূলও ছাড় পাবে না।”
তবে বিরোধীদের এই অভিযোগের পাল্টা মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “আসলে ওরা (বিজেপি) ভয় পেয়েছে। বিজেপি বাংলার একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আবাসের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষ তো নিজের হকের টাকা চাইবেই। তাও তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন ১০০ মিটার দূর থেকে ঘেরাও হবে। তাতেও এত ভয়।”