Homeরাজ্যআলিপুরদুয়ারদশমীতে উমা-বিদায় পর্ব সাঙ্গ হতেই লৌকিক দেবীর পুজোয় মাতেন ডুয়ার্সের বাসিন্দারা

দশমীতে উমা-বিদায় পর্ব সাঙ্গ হতেই লৌকিক দেবীর পুজোয় মাতেন ডুয়ার্সের বাসিন্দারা

প্রকাশিত

দশমীতে উমা-বিদায় পর্ব সাঙ্গ হতেই বাঙালির মন খারাপ হয়ে যায়। আকাশ-বাতাস জুড়ে শোনা যায় বিষাদের সুর। কিন্তু দশমীতে উমা বিদায়ের পর্ব সাঙ্গ হতে না হতেই উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের বেশ কিছু অঞ্চলের মানুষ প্রবল উৎসাহে মেতে ওঠেন নতুন এক উৎসবে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার আর আলিপুরদুয়ারে হয় ভাণ্ডানী দেবীর পুজো।

একাদশীর দিন থেকে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত হয় এই ভাণ্ডানী দেবীর পুজো। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার আর কোচবিহারের আদি বাসিন্দা রাজবংশী সমাজের দেবী ভাণ্ডানীর পুজো বহু দিন ধরেই প্রচলিত। এখন রাজবংশী সমাজের একান্ত নিজস্ব এই পুজো উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলে সর্বজনীন রূপ পেয়েছে। দেবী ভাণ্ডানী উত্তরবঙ্গের লৌকিক দেবী হলেও হয়ে উঠেছেন লোকসংস্কৃতির ধারক। এলাকাভেদে দেবী ভিন্ন নামে পূজিতা হন। কোথাও ভান্ডারনী, কোথাও ভাণ্ডানী, কোথাও বনদুর্গা, কোথাও বনদেবী, কোথাও আবার অঞ্চলভেদে ডাংধারী মাও বা লাঠিধারী মা হিসাবেও পূজিতা হন। রাজবংশী ভাষায় লাঠিকে বলা হয় ডাং আর মাও হলেন মা।

ইতিহাসবিদদের মতে, ভাণ্ডানী দেবী দুর্গার লৌকিক রূপ হলেও মহিষাসুরমর্দিনী নন। দেবী রূপে একজন সাধারণ নারী। দেবী এখানে চতুর্ভুজা। চতুর্ভূজা দেবী ভাণ্ডানীও পূজিতা হন সপরিবার অর্থাৎ সঙ্গে থাকেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিক। তবে মনে করা হয়, মহিষাসুরকে বধ করে স্বর্গে ফেরার পথে রাজবংশী কৃষকদের প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে দেবী মর্ত্যলোকে আরও কয়েক দিন থেকে যান। তাই মহিষাসুর থাকে না ভাণ্ডানী দেবীর সঙ্গে।

তন্ত্রমতে পুজো হয়। দেবীর গায়ের রঙ রক্তবর্ণ। লোকশ্রুতি অনুযায়ী, দশমীর দিন কৈলাসে যাওয়ার পথে দেবী দুর্গার পথ আটকে পুজো দিতে না পারা অনেক সাধারণ মানুষ তাদের পুজো নিয়ে যাওয়ার প্রার্থনা জানায়। দেবী তাদের বলেন দশভুজা হিসাবে তিনি পুজো নিতে পারবেন না। দেবী তখন চতুর্ভুজা রূপে ভাণ্ডানী দেবী রূপে আবির্ভূত হন।

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, সমাজে বর্ণভেদ প্রথা প্রচলিত থাকায় সাধারণ মানুষ বিশেষত নিম্নবর্গীয়রা দুর্গাপুজোয় যোগ দিতে পারত না। তখন দুর্গাপুজোর আয়োজন করতে হলে রাজাকে জানাতে হত। তিনি সম্মতি দিলেই দুর্গাপুজো শুরু করা যেত। তাই মূলত কৃষিজীবী মানুষরা নিজেদের আরাধ্য হিসাবে দুর্গাপুজোর বিকল্প হিসাবে ভাণ্ডানী দেবীর পুজো সূচনা করেন। মনে করা হয়, ভাণ্ডার অর্থাৎ শস্যের ভাণ্ডার থেকে এসেছে ভাণ্ডানী কথাটি। রাজবংশী সম্প্রদায়ের কৃষকদের হাত ধরে এই পুজোর সূচনা হয়। দশমীর দিন ‘যাত্রাপুজো’ দিয়ে শুরু হয় পুজো। একাদশীর দিন থেকে শুরু হয় ভাণ্ডানী দেবীর পুজো। রাজবংশী অধ্যুষিত জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ব্লকের দক্ষিণ উলাদাবাড়ি, আলিপুরদুয়ারের ভোলারদাবড়ি ছাড়াও ভাণ্ডানী দেবীর পুজোর ব্যাপক প্রচলন আছে মালবাজার, ধূপগুড়ি, মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা, নাগরাকাটা, খয়েরকাটা আর রানিরহাটে।

আপনার প্রশ্ন, আমাদের উত্তর

সাম্প্রতিকতম

এআইএফএফ সুপার কাপ ২০২৫-২৬: গোলশূন্য ডার্বি, মোহনবাগানকে আটকে সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গল

ভুবনেশ্বর: শুক্রবার ভুবনেশ্বরে আয়োজিত এআইএফএফ সুপার কাপের গ্রুপ ‘এ’-এর শেষ ম্যাচে ঐতিহ্যবাহী কলকাতা ডার্বিতে...

শনিবার ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে ইতিহাস! মুক্তি পেল জুবিন গার্গের স্বপ্নের ছবি ‘রৈ রৈ বিনালে’

অরূপ চক্রবর্তী, গুয়াহাটি: কখনও কখনও কোনো শিল্পী শুধুমাত্র মানুষ নন, হয়ে ওঠেন এক অনুভূতি,...

অভিষেক শর্মার ৩৭ বলে ৬৮ কাজে দিল না, দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে ভারতকে মাত করল অস্ট্রেলিয়া

ভারত: ১২৫ (১৮.৪ ওভার) (অভিষেক শর্মা ৬৮, হর্ষিত রানা ৩৫, জোশ হ্যাজলউড ৩-১৩, নাথান...

এসআইআর আতঙ্কে জন্ম-মৃত্যু সার্টিফিকেট নেওয়ার ভিড়, হায়রানি রুখতে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুরসভা, আশ্বাস মেয়রের

এসআইআর আতঙ্কে জন্ম ও মৃত্যু সনদের জন্য ভিড় বাড়ছে কলকাতা পুরসভায়। মেয়র ফিরহাদ হাকিম আশ্বাস দিয়েছেন, পুরসভা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। তবে অভিযোগ উঠছে দালালচক্র ও অনলাইন চ্যাটবট পরিষেবার ধীরগতির বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন

কোচবিহারের এসপি দ্যুতিমান ভট্টাচার্যকে সরাল নবান্ন! দীপাবলির রাতে ‘লাঠিপেটা’-র অভিযোগ ঘিরে বিতর্কই কি কারণ?

দীপাবলির রাতে শব্দবাজি বন্ধ করতে গিয়ে মহিলা ও শিশুকে মারধরের অভিযোগ ওঠে কোচবিহারের এসপি দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। বিতর্কের জেরে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল। নতুন এসপি হলেন সন্দীপ কাররা। নবান্ন জানিয়েছে এটি রুটিন বদলি, তবে ঘটনার সঙ্গে যোগ অস্বীকার করা যায় না বলেই মত অনেকের।

কলকাতা দুর্গাপূজা কার্নিভাল ২০২৫: নৃত্য-সংগীত সহযোগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

কলকাতা: শুরু হয়েছিল ২০১৬-তে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে। মাঝে এক বছর বাদ ছিল...

বৃষ্টি ও ভুটান থেকে আসা জলে প্লাবিত ডুয়ার্সের ৩০টি চাবাগান, বড় ক্ষতির আশঙ্কা

শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত টানা ৩৫০ মিমি বৃষ্টিতে ডুয়ার্সের বানারহাট, নাগরাকাটা ও কালচিনির বিস্তীর্ণ চা-বাগান জলমগ্ন। ৩০টিরও বেশি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত, সেতু ভেঙে আটকে হাজারো মানুষ।