কলকাতা: ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ছ’টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্যের এই ছয় আসনে উপনির্বাচন ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। যেগুলি হল সিতাই, মাদারিহাট, নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর এবং তালড্যাংড়া। আগামীকাল, শনিবার (২৩ নভেম্বর) এই আসনগুলির ভোটগণনা হবে।
এই ছ’টি আসনে উপনির্বাচনের প্রয়োজন হয় কারণ এখানকার বিধায়কেরা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। হাড়োয়া থেকে নির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম বসিরহাটের সাংসদ হলেও সম্প্রতি তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে, হাড়োয়াতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও বসিরহাট লোকসভা আসনে এই দফায় ভোটগ্রহণ হয়নি।
অন্য দিকে, কোচবিহারের সিতাই আসনের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বাসুনিয়া সাংসদ হন। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক ব্যারাকপুরের সাংসদ হয়েছেন। মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বিজেপির টিকিটে সাংসদ হন। তালড্যাংড়া ও মেদিনীপুর আসন থেকে যথাক্রমে তৎকালীন বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী এবং জুন মালিয়া সাংসদ নির্বাচিত হন।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ছ’টি আসনের মধ্যে একমাত্র মাদারিহাট বিজেপি দখল করেছিল। বাকি পাঁচটি আসন ছিল তৃণমূলের দখলে। বিজেপি এই উপনির্বাচনে নিজেদের শক্তি ধরে রাখতে মরিয়া, অন্যদিকে তৃণমূল এই আসনগুলিতে পুনরায় জয়ী হয়ে নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে চাইছে।
১৩ নভেম্বর বাংলার ছয়টি বিধানসভা আসনে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। রাজনৈতিক মহলে এখন নজর রয়েছে আগামীকালের গণনার দিকে। বিশেষ করে আরজি কর-কাণ্ডের পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের ফলাফ থেকে বহুবিধ প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যেতে পারে।
আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ চলেছে মাসাধিক কাল ধরে। বিরোধীরা এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে ভোটের ফল নিজেদের পক্ষে ঘোরানোর চেষ্টা করবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উপনির্বাচনের প্রচারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে এমনটাও বলতে শোনা গিয়েছে, “আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যার পর এই প্রথম ভোট। আপনি কি জবাব দিতে চান না? পশ্চিমবঙ্গে সরকারের পরিবর্তনই ন্যায়বিচার পাওয়ার একমাত্র উপায়।”
তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এই প্রচারকে আমল দিতে নারাজ। দলীয় এক শীর্ষ নেতার কথায়, “আরজি কর আন্দোলন আমাদের ভাবমূর্তি কিছুটা নষ্ট করেছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের জনসমর্থন অটুট রয়েছে। তা ছাড়া, উপনির্বাচনে শাসক দলেরই সুবিধা থাকে।”


