বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই। অন্তত ২৮ জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় চলবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির দাপট। কোথাও কোথাও অতিরিক্ত বৃষ্টিরও আশঙ্কা করছে হাওয়া অফিস।
এই টানা বর্ষণের জেরে ইতিমধ্যেই জলমগ্ন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃহস্পতিবার রাতভর বৃষ্টিতে কোথাও জমেছে গোড়ালি ভেজা জল, আবার কোথাও হাঁটু পর্যন্ত। আকাশ আড়াল করা মেঘের ফাঁক দিয়ে সূর্য মাঝে মাঝে উঁকি দিলেও, তার আলোয় তেমন জোর নেই।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্ট নিম্নচাপ পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে গিয়েছে এবং তা এখন সুস্পষ্ট নিম্নচাপের রূপ নিয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭.৬ কিমি উচ্চতায় সংলগ্ন ঘূর্ণাবর্তও রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নিম্নচাপ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।
এর জেরে শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টিতে ভাসবে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গ দুই-ই। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দুই বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ায় জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। এই জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ পৌঁছাতে পারে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত।
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়িতেও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সঙ্গে ৩০–৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনাও থাকছে।
এমন দুর্যোগপূর্ণ আবহেই গঙ্গাসাগরে ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা প্রায় ৩০ জনের একটি পর্যটক দল বৃহস্পতিবার দুপুরে গঙ্গাসাগরে পৌঁছন। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তাঁরা জোয়ারের সময় এক নম্বর ঘাটে স্নান করতে নামেন। সেই সময় সমুদ্রের জলে তলিয়ে যান সন্দীপ গন্ড নামে ২৪ বছর বয়সি এক যুবক।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কোস্টাল থানার পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও যুবকের কোনও খোঁজ মেলেনি।
আবহাওয়া দফতরের তরফে সতর্ক করে জানানো হয়েছে, সমুদ্র উত্তাল থাকবে, তাই মৎস্যজীবীদেরও অন্তত কয়েক দিন সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টানা বৃষ্টি ও নদী-সমুদ্রের জলস্ফীতির ফলে জনজীবনে যে প্রভাব পড়বে, তা বলাই বাহুল্য। প্রশাসন থেকে নাগরিকদের সতর্ক থাকতে এবং আবহাওয়া অফিসের আপডেট মেনে চলার আবেদন জানানো হয়েছে।