সিউড়ি শহরের যানজট সমস্যা মোকাবিলায় মঙ্গলবার থেকে স্থাননীয় টোটোগুলিতে কিউআর কোড লাগানোর কাজ শুরু করল পুরসভা। মঙ্গলবার জেলাশাসক বিধান রায়ের হাত থেকে কয়েক জন টোটোচালকের কিউআর কোড পেয়েছেন। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যানজট নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য নিয়েছেন পুরকর্তৃপক্ষ।
কিউআর কোড স্ক্যান করে সাধারণ যাত্রী থেকে পুলিশ প্রশাসন, সবাই টোটো এবং তার চালকের তথ্য সরাসরি সার্ভার থেকে জানতে পারবেন। টোটো চালকের ফোন নম্বর, পরিচয় এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এই কোডে সংরক্ষিত থাকবে। যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার বা অন্য কোনো অভিযোগ থাকলে তা জানানোও সহজ হবে।
সিউড়ির পুরপিতা উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেন, “যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং পরিবহণ ব্যবস্থা আরও কার্যকর করতে আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।”
জানা গিয়েছে, সিউড়ি শহরে প্রায় তিন হাজার টোটো রয়েছে। এত বিপুল সংখ্যক টোটো রাস্তায় নামলে যানজট অনিবার্য হয়ে ওঠে। পথচারী থেকে শুরু করে বাইক এবং সাইকেল চালকেরাও সমস্যায় পড়েন। শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকা থেকে আসা টোটোগুলিও শহরের পথ দখল করে থাকে বলে অভিযোগ।
আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, নির্দিষ্ট কোনও টোটো সপ্তাহের কোন কোন দিন রাস্তায় নামবে, সেই তথ্যও ওই কোডের মাধ্যমে জানা যাবে। এতে শহরের যাতায়াত ব্যবস্থা আরও নিরাপদ এবং স্বচ্ছ হবে বলে আশাবাদী পুর কর্তৃপক্ষ। টোটো ইউনিয়নের সম্পাদক শেখ কুরশেদ আলি জানিয়েছেন, রোটেশন পদ্ধতিতে টোটো চালানোর ভাবনাচিন্তা চলছে। কিউআর কোড স্ক্যান করে যাত্রীরা এই সংক্রান্ত তথ্যও জানতে পারবেন।
আগামী ২৫ দিনের মধ্যে সিউড়ি শহরের সমস্ত নথিভুক্ত টোটোতে কিউআর কোড লাগানো হবে। পুরসভার আশা, এই পদক্ষেপ শহরের পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও সুষ্ঠু করবে এবং যাত্রীদের জন্য নিরাপদ ও সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করবে।
বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “যানজট মুক্ত শহর গড়তে এটি প্রথম পদক্ষেপ।” তিনি আরও জানান, গ্রামীণ এলাকা থেকে শহরে আসা টোটোগুলি শহরের প্রবেশমুখেই যাত্রী নামিয়ে দেবে। শহরের মধ্যে শুধুমাত্র পুরসভার অনুমোদিত টোটোগুলিই চলাচল করতে পারবে।
পরিবহণ দফতর ইতিমধ্যেই টোটো চলাচল নিয়ে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে। সিউড়ি শহরের যানজট সমস্যার সমাধানে এই উদ্যোগ যে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে, সেই আশাই করছেন শহরবাসী।