রাজনৈতিক মিছিলের জেরে শহরের যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এবার কী সেই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হতে চলেছে? মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, শহরের রাজপথে কোনও রাজনৈতিক মিছিলের সময় রাস্তার সর্বাধিক এক-তৃতীয়াংশ জায়গা ব্যবহার করা যাবে। বাকি দুই-তৃতীয়াংশ রাখতে হবে যান চলাচলের জন্য।
এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। দক্ষিণ কলকাতার এক আইন কলেজে ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার (বিজেএওয়াইএম) মিছিলের অনুমতি দিতে গিয়ে এই পর্যবেক্ষণ দেন তিনি।
বিচারপতি ঘোষ জানিয়েছেন, শুধুমাত্র এই মিছিলেই নয়, আগামী দিনে যেকোনও রাজনৈতিক দলের মিছিলের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম মানতে হবে। তাঁর কথায়, “কমপক্ষে একদিকে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা যেন থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
এছাড়াও বিচারপতি বলেন, মিছিলের শুরুতে থাকা ব্যানারের প্রস্থও রাস্তার এক-তৃতীয়াংশের বেশি হওয়া চলবে না। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, “যদি রাস্তা ২০ ফুট চওড়া হয়, তাহলে ব্যানারের প্রস্থ সর্বাধিক ৬ ফুট হতে পারে।”
বিজেপির যুব সংগঠন প্রথমে কসবা থানার সামনে পর্যন্ত মিছিল করার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি ওই থানা চত্বরে অশান্তি হয়েছে। তাই সেখানে মিছিলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
তবে বিচারপতি ঘোষ পর্যবেক্ষণ করেন, তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তরা পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। তাই এই মুহূর্তে কসবা থানার সামনে পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি দেওয়া উচিত। আদালত এই অনুমতিও দিয়েছে।
বিচারপতি আরও নির্দেশ দিয়েছেন, মিছিল চলাকালীন যেন কোনওরকম হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটে। brickbat ছোড়া, সরকারি কর্মীদের প্রতি আক্রমণ বা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করা যাবে না। পরিস্থিতি জটিল হলে মিছিলের আয়োজকদেরই আন্দোলনকারীদের শান্ত রাখতে হবে। ইতিমধ্যেই আয়োজকরা তাঁদের মোবাইল নম্বর জমা দিয়েছেন।
আদালত রাজ্য সরকারকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যকে বলা হয়েছে, কলকাতা সহ রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় কোথায় কোথায় ধর্না বা বিক্ষোভ কর্মসূচি করা যাবে, তার নির্দিষ্ট তালিকা বা নোটিফিকেশন দ্রুত প্রকাশ করতে হবে। এই বিষয়ে মুখ্যসচিব, কলকাতা পুলিশের কমিশনার এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিপির কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পরবর্তী শুনানিতে পেশ করার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি।