উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ সাত বছরের জট অবশেষে কাটল কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, ১৪০৫২টি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি) নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এবং তার পরবর্তী চার সপ্তাহের মধ্যে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
২০১৫ সাল থেকে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে ছিল। বিভিন্ন ত্রুটি এবং মামলার কারণে বারবার এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। ২০২০ সালে কলকাতা হাই কোর্ট পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে বাতিল করে দিয়েছিল। তবে ২০২৩ সালে আদালতের অনুমতিতে প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছিল, কিন্তু কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি এসএসসিকে। এই মামলাটি পরবর্তীতে নতুন ডিভিশন বেঞ্চে স্থানান্তরিত হয়, যেখানে গত ১৮ জুলাই শুনানি শেষে বুধবার রায় ঘোষণা করা হয়।
মামলাকারীরা একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন, যার মধ্যে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া থেকে ১,৪৬৩ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ অন্যতম। তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন যে, বাদ পড়ার কারণ সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। চারবার খতিয়ে দেখার পর শেষ পর্যন্ত ৭৪ জনকে বাদ দেওয়া হয়, তবে সেখানেও নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
এছাড়াও, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ নীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়। তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং মহিলাদের সংরক্ষণ নিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছিল। ওএমআর শিটেও অসঙ্গতি ছিল বলে আদালতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
এই দীর্ঘ সাত বছরের প্রতীক্ষার পর, অবশেষে আদালতের নির্দেশে নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হবে বলে আশাবাদী চাকরিপ্রার্থীরা।
এক নজরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ:
নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ: ১৪০৫২টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি) নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে।
মেধাতালিকা প্রকাশের সময়সীমা: আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ।
কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া: মেধাতালিকা প্রকাশের পরবর্তী চার সপ্তাহের মধ্যে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
নিয়োগ জট নিরসন: সাত বছরের নিয়োগ জট অবসান করে হাই কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে।
ডিভিশন বেঞ্চের রায়: বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেছেন।