কলকাতা: রাজ্য সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে ২০১৬ সালে রাজ্যস্তরের পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ করা সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির বেঞ্চ প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিলের পাশাপাশি সিবিআই-কে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশও দিয়েছে। তিন মাসের মধ্যে সিবিআই-এর কাছে রিপোর্ট চেয়েছে আদালত।
বেতন ফেরত
সোমবার এসএসসি মামলার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছে। এর ফলে বাতিল হয়ে গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি। আদালত জানিয়েছে, এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের চার সপ্তাহের মধ্যে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। কারণ, তাঁদের জনগণের টাকা থেকে বেতন দেওয়া হয়েছে। সুদের হার হবে বছরে ১২ শতাংশ। ছ’সপ্তাহের মধ্যে জেলা শাসকদের টাকা উদ্ধার করতে হবে।
ওএমআর শিট আপলোড
এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনেক ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে আপলোড করা হয়েছে। তবে এখনও অনেক ওএমআর শিট আপলোড করা বাকি আছে। সমস্ত ওএমআর শিটের কপি আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। উত্তরপত্র যাতে জনগণ যাতে দেখতে পান, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে। সেই সঙ্গে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়েছে এসএসসি-কে । পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটের মধ্যে এই রায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বড় ধাক্কা দিল রাজ্যকে।
সিবিআই তদন্ত
এ দিন আদালত রায়ে জানায়, সিবিআই তদন্ত করবে। প্রয়োজনে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে পারবে। বেআইনিভাবে সুপার নিউমেরিক পোস্ট করে চাকরি পাওয়াদের হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই। এই দুর্নীতির জট ছাড়াতে তদন্তের প্রয়োজনে যাকে যাকে প্রয়োজন হবে, তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই। তিন মাসের মধ্যে সিবিআই-এর কাছে রিপোর্ট চেয়েছে আদালত।
২৮১ পৃষ্ঠার রায়
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির বেঞ্চে গত ডিসেম্বর মাস থেকে এসএসসি-র মামলাগুলির শুনানি শুরু হয়েছিল। গত ২০ মার্চ শুনানি শেষ হয়। তার পর রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছিল আদালত। এ দিন এসএসসি নিয়োগ মামলায় রায় ঘোষণা করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক। ২৮১ পৃষ্ঠার রায় পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পেলেন ৬৬ হাজারেরও বেশি ভারতীয়, বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়