কলকাতা: জানুয়ারির ৫ তারিখে যে ঘটনার সূত্রপাত, ঠিক দু’ মাস পার করে ৬ মার্চ কেন্দ্রীয় এজেন্সি হাতে পেল সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখকে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। তার পর থেকে তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া ওই নেতার ঠিকানা ছিল ভবানী ভবন। বুধবার তাঁকে হাতে পেল সিবিআই।
বুধবার সন্ধ্যায় ভবানী ভবনে সিআইডির হেফাজত থেকে শাহজাহানকে নিয়ে নিজাম প্যালেসে যায় সিবিআই। রাত ৯টা ২২ মিনিটে শাহজাহানকে নিয়ে নিজাম প্যালেসে হাজির হয় সিবিআই। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে, প্রায় ১ প্ল্যাটুনের মতো সিআরপিএফ বাহিনীর উপস্থিতিতে শেখ শাহজাহানকে নিয়ে আসা হয়। এবার সিবিআই বের করবে এই ৫৬ দিন, রাজ্য পুলিশের হাতে ধরা না পড়া পর্যন্ত কোথায় ছিলেন তিনি, কার হেফাজতে? সিবিআই জানতে চাইতে পারে, কেন তাঁর এলাকায় গিয়ে ইডি আধিকারিকদের হামলার শিকার হতে হল। ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কে বা কারা?
এর পরই শাহজাহানকে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ।ভবানী ভবন থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, কলকাতা হাইকোর্ট ইডির মামলার প্রেক্ষিতে শাহজাহানকে বিকেল ৪টে ১৫-র মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আদালতের সেই নির্দেশকে সম্মান জানিয়েছে সিআইডি। শাহজাহানকে তুলে দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। আগামী দিনে এই সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তারা এগোবে।
তবে, এরই মধ্যে জোর চর্চা চলছে শাহজাহানকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে। সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, শেখ শাহজাহানকে এখন নিজাম প্যালেসে রেখেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পরবর্তী সময়ে তাঁকে দিল্লির অফিসে নিয়ে গিয়ে জেরা করতে চান সিবিআই আধিকারিকরা।
যদিও সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, এই বিষয়টি এখনও আলোচনার স্তরে রয়েছে। কারণ, শাহজাহনের বিরুদ্ধে এখন যে মামলাগুলি রয়েছে, সেগুলি আদালতের অনুমতি নিয়ে দিল্লিতে নিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে রাজ্যের বাইরে শাহজাহানকে নিয়ে গিয়ে জেরা করা তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ, এমন কোনও যুক্তি আদালতে দিতে পারে সিবিআই। এ ছাড়াও দিল্লিতে নতুন করে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেও তাঁকে রাজধানীতে নিয়ে গিয়ে জেরা করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি থেকেই বাংলার সবচেয়ে আলোচ্য নাম ছিল শাহজাহান। দীর্ঘ ৫৫ দিন পর শাহজাহানকে পুলিশ গ্রেফতার করে। সন্দেশখালির স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মারধর, হুমকি, অত্যাচার, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিল শাহজাহান বাহিনী।