কলকাতা: রাজ্যের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্নাতক স্তরে ভর্তির পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। উচ্চশিক্ষা দফতরের তথ্য অনুযায়ী, তিন দফা ভর্তির পরও প্রায় ৩০ শতাংশ আসন শূন্য রয়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজগুলিকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নতুন করে ভর্তি নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেশিরভাগ কলেজে এখনও অনেক আসন ফাঁকা রয়েছে। কলেজগুলির অনুরোধেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, তারা নিজেদের পোর্টালের মাধ্যমে ফের পড়ুয়াদের ভর্তি নিতে পারবে।”
কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে প্রথম ভর্তি প্রক্রিয়া
এ বছর প্রথমবার রাজ্যের সমস্ত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হয়। দু’দফায় এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও বহু আসন শূন্য থেকে যায়। পরে বিকেন্দ্রীকরণ পদ্ধতিতে কলেজগুলিকে নিজেরাই ভর্তি নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া শেষ হয় ৩০ সেপ্টেম্বর।
কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। বিকেন্দ্রীকরণ পদ্ধতিতে কলেজগুলিতে মাত্র ২০ শতাংশ আসন পূরণ হয়েছে।
কলেজগুলির প্রতিক্রিয়া
কলকাতার বিভিন্ন কলেজের পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের ৩,১৪০টি আসনের মধ্যে এখনও ভর্তি হয়েছেন মাত্র ২,০৩২ জন। কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি বলেন, ‘‘এখন নতুন করে ভর্তি নেওয়া লোক হাসানোর মতো। কোনও ছাত্রছাত্রী বসে নেই। পোর্টাল খুলে ভর্তি নিলে কলেজগুলির আর্থিক ক্ষতি হবে।”
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের প্রায় ৩,০০০ আসনের মধ্যে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ১,৭০০ জন। অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর জানান, ‘‘আমরা নতুন করে পোর্টাল খুলব না। তবে আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা সরাসরি এসে ভর্তি হতে পারবেন।”
আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবীর প্রথম সেমেস্টারের সময়সীমা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, এত দেরিতে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের জন্য সময়মতো সিলেবাস শেষ করা কঠিন হবে।
ভর্তির সংকটের প্রভাব
কলেজগুলিতে প্রথম দফার ক্লাস শুরু হয়েছে ৮ অগস্ট থেকে। ফেব্রুয়ারিতে প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা। এত দেরিতে ভর্তি হলে পড়ুয়াদের পক্ষে সিলেবাস শেষ করা এবং পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া চ্যালেঞ্জিং হবে। এই সমস্যা ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।