পঞ্চদীপ মিনার হাওড়ার পূর্ব-পশ্চিম বাইপাসের ধারে, দমুরজলা ও কোণা এক্সপ্রেসওয়ে এবং হাওড়া ময়দানের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এটি শহিদ মিনারের (৪৮ মিটার) দ্বিগুণ উচ্চতার এবং হাওড়ার এক নতুন পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে।
এই টাওয়ারটি IIEST শিবপুরের নকশা অনুযায়ী নির্মিত এবং হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে একটি বেসরকারি সংস্থা।
বিশেষত্ব ও সুযোগ-সুবিধা
- ১১২ মিটার উচ্চতায় ২০০ বর্গমিটারের একটি পর্যবেক্ষণ ডেক, যেখানে একসঙ্গে ২০০ জন দর্শক থাকতে পারবেন।
- চারটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপ থাকবে, যা ২০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত দৃশ্যমান করবে। এর ফলে কলকাতা, নিউ টাউন, সল্টলেক, দমদম বিমানবন্দর, হুগলি ও হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা দেখা যাবে।
- ১০৪ মিটার উচ্চতায় ১৫০ আসনের ঘূর্ণায়মান রেস্তোরাঁ, যা দর্শকদের নতুন অভিজ্ঞতা দেবে।
- ১০৮ মিটার উচ্চতায় ব্যাঙ্কোয়েট হল, যেখানে বড় অনুষ্ঠান বা জমায়েত আয়োজন করা যাবে।
- আরও দুটি ডেক রয়েছে—একটি ৫০ মিটার এবং অন্যটি ২৫ মিটার উচ্চতায়।
দর্শকদের জন্য দুটি উচ্চগতির এলিভেটর থাকবে, যা প্রতি সেকেন্ডে ৩ মিটার গতিতে চলবে এবং একসঙ্গে ১৫ জন করে যাত্রী বহন করতে পারবে।
স্থাপত্যশৈলী ও নির্মাণশক্তি
- ভূমিকম্প প্রতিরোধী ৩৫ মিটার গভীর ভিত্তি, যেখানে ১৬৯টি পাইলিং করা হয়েছে।
- ভূমিস্তরে মিনারের ব্যাস ৪০ মিটার, শীর্ষে ২২ মিটার এবং নিম্ন অংশের ব্যাস ১২ মিটার।
- প্রায় ১,৪০০ টন স্টিল ব্যবহৃত হয়েছে নির্মাণকাজে।
কী বলছেন প্রশাসনিক কর্তারা?
হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানান, “পঞ্চদীপ মিনার হাওড়ার মর্যাদা জাতীয় স্তরে বাড়াবে। এটি শুধু হাওড়া ও কলকাতার নয়, সারা দেশের পর্যটকদের জন্য আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠবে।”
কেন্দ্রীয় হাওড়ার বিধায়ক এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “২০১৫ সালে এর শিলান্যাস করা হয়েছিল। তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। এটি হাওড়া ও বাংলার জন্য এক অনন্য বিনোদন কেন্দ্র হয়ে উঠবে, যা আন্তর্জাতিক পর্যটকদেরও আকর্ষণ করবে।”
শেষ পর্যায়ে নির্মাণকাজ
শেষ পর্যায়ের নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে চলছে, এবং অনুমান করা হচ্ছে, আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই দর্শকদের জন্য খুলে যাবে এই বিস্ময়কর স্থাপত্য।