ওটিপি জালিয়াতি থেকে শুরু করে ডিজিটাল প্রতারণা— সাইবার দুনিয়ায় এখন নিত্য নতুন প্রতারণার ফাঁদ তৈরি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ প্রতিনিয়ত খোয়া যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, খোয়া যাওয়া টাকার কি হবে? সেই দুশ্চিন্তা দূর করতে এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হওয়া রুখতে নিজেদের ওয়েবসাইটে বিশেষ ফিচার নিয়ে এল লালবাজার।
কলকাতা পুলিসের নিজস্ব ওয়েবসাইটে যুক্ত হয়েছে ‘রিপোর্ট ইওর সাইবার ক্রাইম’ নামে একটি বিশেষ ফিচার। যে কোনও মানুষ এখন দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকেই কলকাতা পুলিসের কাছে অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। অভিযোগ জানামাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই খোয়া যাওয়া টাকার লেনদেন ব্লক করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কীভাবে কাজ করবে এই ফিচার?
লালবাজারের ওয়েবসাইটে ঢুকলেই দেখা যাবে ‘রিপোর্ট ইওর সাইবার ক্রাইম’ অপশন। সেখানে ক্লিক করলে সরাসরি খুলে যাবে সাইবার প্রতারণার কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার। প্রতারিত ব্যক্তিকে নাম, ঠিকানা, থানার নাম, প্রতারণার সময়, খোয়া যাওয়া টাকার পরিমাণ এবং ব্যাঙ্কের নাম উল্লেখ করতে হবে। অভিযোগপত্র আপলোড হলেই সেটি পৌঁছে যাবে তিন জায়গায়— কলকাতা পুলিসের সাইবার বিভাগের তথ্যভাণ্ডার, ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (আইফোরসি) এবং দেশের সমস্ত ব্যাঙ্ক (রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি) কর্তৃপক্ষের কাছে।
জনসচেতনতাতে জোর
লালবাজারের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, সাইবার প্রতারণা রুখতে জনসচেতনতা একমাত্র উপায়। তবে আপাতত টাকা খোয়া গেলে তা আটকালেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তাই ওয়েবসাইটে এই বিশেষ ফিচার যোগ করা হয়েছে। লালবাজারের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, জালিয়াতির শিকার হলে দ্রুত ওয়েবসাইটে অভিযোগ জানান। তাতে টাকার লেনদেন দ্রুত ব্লক করা সম্ভব হবে।
সময়ের গুরুত্ব
লিখিত অভিযোগের ক্ষেত্রে অনেক সময় চলে যায়, যার ফলে প্রতারকরা টাকাটি সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়। কিন্তু এই নতুন ফিচারের মাধ্যমে অনলাইন অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ‘আইফোরসি’ নির্দেশ পাঠাবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে। এরপর মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই ব্লক করা হবে সেই টাকা।
কলকাতা পুলিসের এই নতুন উদ্যোগ সাইবার প্রতারণা রোধে এক বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।