কলকাতা হাইকোর্টের ২৬ সেপ্টেম্বরের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ওই নির্দেশে হাইকোর্ট জানিয়েছিল, বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা বীরভূমের সোনালী খাতুন ও আরও পাঁচজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে। কেন্দ্রের পক্ষে ২২ অক্টোবর একটি আবেদন জমা পড়ে।
সূত্র জানিয়েছে, ওই ছয়জনের পরিবার—যাদের বীরভূমের বাসিন্দা বলে দাবি—এখন কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানাতে চলেছে যাতে দ্রুত রায় কার্যকর করে তাঁদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা হয়। কিন্তু ২৪ অক্টোবর চার সপ্তাহের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও, তাঁদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী জানান, “যে কোনও পক্ষই উচ্চতর আদালতে যাওয়ার অধিকার রাখে। তবে এই মামলায় একটি গর্ভবতী মহিলা ও দু’টি শিশুর বিষয় রয়েছে—সেই মানবিক দিকটি বিবেচনা করেই দ্রুত সমাধানের আশা করা হয়েছিল।”
হাইকোর্টে জমা পড়া হেবিয়াস কর্পাস আবেদনপত্রে সোনালীর বাবা ভূদু শেখ উল্লেখ করেন, তাঁর মেয়ে তখন আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন।
ঘটনাটি শুরু হয় ২১ জুন, যখন দিল্লির রোহিণী থেকে সোনালী, তাঁর স্বামী দানিশ শেখ, তাঁদের ৮ বছরের ছেলে সাবির, এবং সুইটি বিবি ও তাঁর দুই পুত্রকে “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী” সন্দেহে আটক করা হয়। ২৬ জুন দিল্লির ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (FRRO) তাঁদের দেশছাড়া করার নির্দেশ দেয় এবং সেদিনই তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়।
এরপর ২১ আগস্ট বাংলাদেশে তাঁদের “অবৈধভাবে প্রবেশের” অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁরা এখন সেখানকার একটি কারাগারে বন্দি আছেন।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের বেঞ্চ FRRO-র আদেশ বাতিল করে জানায়, ভূদু শেখ বীরভূমের স্থায়ী বাসিন্দা এবং সোনালী ও অন্যান্যরাও জন্ম থেকেই বীরভূমেই বসবাস করে আসছেন। আদালত নির্দেশ দেয়, ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
তবে কেন্দ্র ও দিল্লি পুলিশ যুক্তি দেয়, কলকাতা হাইকোর্টের এই মামলার এখতিয়ারই নেই। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (ASG) অশোক কুমার চক্রবর্তী জানান, ভূদু শেখ আদালতে গোপন করেছিলেন যে, এর আগেই দিল্লি হাইকোর্টে একই বিষয়ে দুটি আবেদন বিচারাধীন ছিল।
এখন এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে উঠেছে। কেন্দ্র সেখানে জানাবে—মামলাটি দিল্লি হাইকোর্টের এখতিয়ারভুক্ত, কলকাতা হাইকোর্টের নয়।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us