কলকাতা: আইএসএফের সঙ্গে বামেদের লোকসভায় আসন সমঝোতা ভেস্তে গিয়েছে। জোটের ব্যাপারে আইএসএফের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। শুক্রবার নতুন করে পাঁচ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে গিয়ে নওশাদ সিদ্দিকিদের কাঠগড়ায় তুলে বিমান বলেন, “এই জোটের ব্যাপারে আন্তরিকতা ছিল কিনা বুঝতে পারছি না।”
আইএসএফের সঙ্গে বামেদের লোকসভায় আসন সমঝোতা ভেস্তে যাওয়ায় হতাশ হতাশ আইএসএফের অনেক কর্মীও। এ জন্য বামেদেরই তাঁরা দুষছেন। বামেরা অবশ্য তা মানেনি। বিমান বলেন, “তারা গতকাল বলেছে আসন সমঝোতা করে জোট হল না, এর দায় বর্তায় বামেদের উপর। কী করে বামেদের দায়িত্ব আসে! এমনও হয়েছে আলোচনা আছে ৪টের সময়, আর এসেছে ৫টায়। এই জোটের ব্যাপারে আন্তরিকতা ছিল কিনা বুঝতে পারছি না। আমরা দায়ী নই।”
গত ২০২১ বিধানসভা ভোটে রাজ্যে তৈরি হয়েছিল সংযুক্ত মোর্চা। যাতে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস ছাড়াও ছিল আইএসএফ। গত কয়েকটি নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট করে ভাল ফল করেছিল আইএসএফ। বামেদের সঙ্গে জোট করেই ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড়ে জেতে আইএসএফ। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বামেদের সঙ্গে জোট করে বেশ কিছু আসন জিতে নেয় আইএসএফ। কর্মীদের মতে, এ বারেও জোট হলে সার্বিক ভাবে ফলাফল ভাল হতো। দলের নিচুতলার কর্মীরাও জোটের অপেক্ষাতেই ছিলেন।
তবে এ বারের লোকসভা ভোটে সেই জোটে এবার ইতি পড়ল বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। কয়েক দিন ধরেই বামেদের সঙ্গেই টানা আলাপ-আলোচনা দেখা গিয়েছে আইএসএফের। অন্য দিকে, কিছুটা দূরত্ব রেখে চলতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসকে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিলেন, “ওদের সঙ্গে আমাদের খুব একটা কথা হতো না। হতো তো বামেদের।”
এ দিকে, জোট নিয়ে বাম-কংগ্রেসকে দুষেছিলেন নওশাদ সিদ্দিকি। বলেছিলেন, জোট নিয়ে বামফ্রন্ট-কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চলছিল। কিন্তু, দেখছি শুধু সময়টা শেষ হচ্ছে। টাইম কিল হচ্ছে। সদর্থক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান অবশ্য় এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি কোনো রাখঢাক না করেই জানান, একাধিকবার আসন সমঝোতা নিয়ে কথা বলার জন্য ডাকা হলেও আইএসএফ নেতৃত্ব আসেননি। এলেও সময়ে আসেননি। শুধু কি তাই, ঘুরিয়ে নওশাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও।