বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হেনস্থার অভিযোগের আবহে ফের নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল পুনেতে এক বাঙালি যুবকের রহস্যমৃত্যুকে ঘিরে। মৃত যুবকের নাম দীপু দাস। তিনি উত্তরবঙ্গের রাজগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। দিন কয়েক আগেই পুনের এক নির্মাণ সংস্থায় কাজ করতে যান দীপু। পরিবারের দাবি, দুর্ঘটনায় নয়, বরং খুন করা হয়েছে তাঁকে।
মৃতের ভাই অপু দাস জানান, মা শীলা সরকার দাসের লিভারের অসুখে মৃত্যু হয় সোমবার। তার পরের দিন পুণে থেকে এক ঠিকাদার ফোন করে জানান, দীপুর ‘দুর্ঘটনা’ হয়েছে এবং তিনি হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু বুধবার খবর আসে, দীপু মারা গিয়েছেন।
পরিবারে আরও চাঞ্চল্য ছড়ায় যখন মোবাইলে দীপুর রক্তমাখা ছবি পাঠানো হয়। সেই ছবি দেখে সন্দেহ আরও বাড়ে পরিবারের। অপুর দাবি, “যদি সত্যিই দুর্ঘটনা হত, তবে হয়ত হাত-পা ভাঙত, মাথা ফাটত। কিন্তু গলায় ধারালো অস্ত্রের চিহ্ন দেখে আমাদের সন্দেহ আরও ঘনিয়েছে। আমরা সঠিক ময়নাতদন্ত চাই।”
এই ঘটনার পিছনে বাংলা ভাষা বলার বিষয়টিও উঠে আসছে। রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, “এমনও হতে পারে, বাংলা বলায় দীপুকে মারধর করে খুন করা হয়েছে। পশ্চিম ও মধ্য ভারতের নানা প্রান্তে বাংলাভাষীদের উপর হামলার এমন অনেক উদাহরণ আছে।” তিনি এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানান।
তবে মৃত আবু বক্কর মণ্ডলের (উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া) ক্ষেত্রেও শুরুতে এমন অভিযোগ উঠলেও, পরে তদন্তে তা সম্পর্কজনিত টানাপড়েন বলেই উঠে আসে।
এ দিকে দীপুর দেহ ফিরিয়ে আনার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি জানার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার মৃতদেহ রাজ্যে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছে। পুনে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, এক অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং মৃতের পরিবারের পাশে সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।
ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। দীপুর মৃত্যু শুধুই একটি নির্মাণ দুর্ঘটনা, না কি এর পেছনে আছে গভীর কোনও ষড়যন্ত্র? উত্তর দেবে তদন্ত।