Home রাজ্য নদিয়া কল্যাণী বিস্ফোরণকাণ্ডে গ্রেফতার কারখানার মালিক, মোবাইল লোকেশন ধরে পুলিশের অভিযান

কল্যাণী বিস্ফোরণকাণ্ডে গ্রেফতার কারখানার মালিক, মোবাইল লোকেশন ধরে পুলিশের অভিযান

নদিয়ার কল্যাণীর বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় অবশেষে গ্রেফতার হলেন কারখানার মালিক খোকন বিশ্বাস। শুক্রবার দুপুরে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণে চারজন শ্রমিকের মৃত্যু এবং একজনের গুরুতর আহত হওয়ার পর থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ধরে তাঁকে পাকড়াও করল পুলিশ।

বিস্ফোরণের পর পালানোর চেষ্টা, শেষমেশ পুলিশের জালে

শুক্রবার দুপুরে কল্যাণীর রথতলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর থেকেই খোকন বিশ্বাসের খোঁজ করছিল পুলিশ। প্রথমে তাঁর মোবাইল ফোন খোলা থাকলেও পরে তিনি সেটি বন্ধ করে দেন, যাতে ট্র্যাক করা না যায়। তবে তদন্তকারীরা তাঁর সম্ভাব্য অবস্থান বুঝতে পেরে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ও নৈহাটি সংলগ্ন এলাকায় নজরদারি বাড়ায়।

অবশেষে, শুক্রবার সন্ধ্যায় খোকনের এক পরিচিতের মাধ্যমে খবর পেয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। রানাঘাট পুলিশ জেলার আধিকারিকরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন। পুলিশ জানায়, অবৈধভাবে বাজি কারখানা চালানোর অভিযোগ ছাড়াও অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

বাজি কারখানা নাকি দোকান? বিতর্ক

বিস্ফোরণের পর স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পুলিশ ও দমকল বিভাগ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে থাকা কারখানাটি অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল। অনুমতি ছাড়াই সেখানে বাজি তৈরির কাঁচামাল মজুত রাখা হয়েছিল। যদিও স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির দাবি, এটি কারখানা নয়, বরং বাজির দোকান ছিল।

তদন্তে নামল বিশেষ দল, সিসিটিভিতে নজরদারি

বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার সানি রাজ নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জায়গাটি ইতিমধ্যেই সিসিটিভি ক্যামেরায় ঘিরে ফেলা হয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দল শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা করবে বলে জানা গেছে।

পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ‘‘খোকন বিশ্বাসের সঙ্গে আরও কেউ এই কারবারে জড়িত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাজি তৈরিতে কী ধরনের বিস্ফোরক মজুত ছিল, সেটাও তদন্ত করে দেখা হবে।’’

রাজনৈতিক তরজা শুরু, এনআইএ তদন্তের দাবি বিজেপির

কল্যাণীর বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা অম্বিকা রায় এই বিস্ফোরণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী করেছেন। তিনি জানান, ‘‘বারবার প্রশাসনকে অবৈধ বাজি কারখানার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’’ বিজেপি এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কল্যাণী শহরের সভাপতি বিপ্লব দে বলেন, ‘‘এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা পুলিশের তদন্তের ওপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখছি। দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version