গান্ধীনগর: নাসার মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসের শিকড় রয়েছে গুজরাতের ঝুলাসান গ্রামে। সেই গ্রামই এখন আলোচনার কেন্দু বিন্দুতে এসেছে ভিন্ন কারণে। গ্রামের প্রায় দুই ডজন মানুষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি ১০৪ জন ভারতীয়কে নিয়ে একটি মার্কিন সামরিক বিমান পাঞ্জাবের অমৃতসরে অবতরণ করে। তবে ওই বিমানে ঝুলাসানের নিখোঁজ বাসিন্দারা ছিলেন কিনা, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তাঁদের পরিবার। দুই দিন পার হলেও তাঁদের কোনো খোঁজ নেই, যা উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
পরিবারের উদ্বেগ ও রহস্যজনক নীরবতা
নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা কেউই তাঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, “যাঁরা ফেরত এসেছেন, তাঁদের কাছ থেকে যেসব ভয়ংকর অভিজ্ঞতা শুনছি, তাতে নিখোঁজদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।”
কয়েকজন মনে করছেন, বেআইনি অভিবাসনের দালালরা নিখোঁজদের যোগাযোগ করতে নিষেধ করেছেন, যাতে তাঁরা নিরাপদে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন। এক গ্রামবাসী বলেন, “তাঁরা হয়তো এখনো যাত্রাপথে রয়েছেন, অথবা কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন।”

ঝুলাসান থেকে আমেরিকার পথে, পাটিদার সম্প্রদায়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষা
ঝুলাসানের সরপঞ্চ মানি প্যাটেল জানিয়েছেন, গ্রামে প্রায় ৫,০০০ মানুষের বাস, যাঁদের মধ্যে ৩,০০০ জন পাটিদার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে প্রায় ২,০০০ জন বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
প্যাটেল বলেন, “আমাদের গ্রামের অনেক মানুষ জীবিকার খোঁজে আমেরিকা যেতে চান, কারণ সেখানে উপার্জনের সুযোগ কয়েকগুণ বেশি। সামাজিক চাপে অনেকেই এই ঝুঁকি নেন।”
অবৈধ অভিবাসনের প্রবণতা ও প্রশাসনের নীরবতা
গুজরাতের বিভিন্ন গ্রামে অবৈধ অভিবাসনের প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানাতেও ভয় পান, কারণ তাতে তাঁদের আত্মীয়দের যাত্রাপথে সমস্যা হতে পারে।
এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নিখোঁজ ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও তাঁদের আইনগত অবস্থান সম্পর্কে দ্রুত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।