Home রাজ্য নদিয়া ৩০০ বছরের রীতি ভেঙে নদিয়ার শিবমন্দিরে প্রবেশ তফসিলিদের, হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশের প্রহরায়...

৩০০ বছরের রীতি ভেঙে নদিয়ার শিবমন্দিরে প্রবেশ তফসিলিদের, হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশের প্রহরায় পুজো

নদিয়ার বৈরামপুরের শিবমন্দিরে তফসিলি সম্প্রদায়ের প্রবেশাধিকার নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কের অবসান ঘটল বৃহস্পতিবার। কলকাতা হাই কোর্টের ভর্ৎসনার পর পুলিশের প্রহরায় মন্দিরে প্রবেশ করে শিবপুজো করলেন রজক বা ধোপা সম্প্রদায়ের মানুষ। শতাব্দী প্রাচীন এই বৈষম্যের অবসানকে সমাজে সমানাধিকারের লড়াইয়ে বড় জয় বলে মনে করছেন তাঁরা।

হাইকোর্টের ভর্ৎসনা, প্রশাসনিক বৈঠকের পর মীমাংসা

গাজন উৎসবে তফসিলিদের মন্দিরে প্রবেশ এবং সন্ন্যাসী হওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন কিছু ব্যক্তি। আদালত জানায়, এই বৈষম্য মানবাধিকারের পরিপন্থী এবং প্রশাসনের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। এরপর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একাধিক বৈঠক হয় এবং সিদ্ধান্ত হয় যে তফসিলিরাও পুজো দিতে পারবেন।

৩০০ বছরের রীতি ভেঙে ইতিহাস গড়লেন তফসিলিরা

বৃহস্পতিবার কড়া পুলিশি প্রহরায় তফসিলি সম্প্রদায়ের পাঁচটি পরিবার মন্দিরে প্রবেশ করে পুজো দেন। ঐতিহাসিক এই ঘটনার সাক্ষী হয়ে জয়া দাস বলেন, “আমার দাদু-ঠাকুরদারা মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে থেকেও ঢুকতে পারেননি। আজ আমরা সেই দেয়াল ভেঙে ইতিহাস গড়লাম।” সীমা দাসের কথায়, “আজ বুঝলাম, আমরা এই সমাজেরই অংশ।”

প্রশাসনের কড়া নজরদারি, পুলিশের বক্তব্য

অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মন্দিরচত্বরে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার উত্তমকুমার ঘোষ জানান, “শিবমন্দিরে প্রবেশ নিয়ে সমস্যা মিটেছে। সর্বসম্মতিতেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল এবং নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘ্নে পুজো দিতে পেরেছেন।”

প্রথার বিরোধিতায় মন্দির কর্তৃপক্ষ

যদিও মন্দিরের সেবায়েত আশিস কুন্ডুর বক্তব্য, “প্রতিটি ধর্মীয় স্থানের নিজস্ব রীতি থাকে। সেখানে হস্তক্ষেপ কতটা যুক্তিযুক্ত, বুঝতে পারছি না।” তবে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য উজ্জ্বল দাস বলেন, “ঈশ্বর সকলের জন্য, তফসিলিদের মন্দিরে প্রবেশাধিকারে এতদিন বাধা দেওয়া ভুল ছিল।”

তফসিলিদের এই মন্দির প্রবেশ যে সমাজে এক নতুন বার্তা দেবে, সে বিষয়ে একমত স্থানীয় অধিকার আন্দোলনের কর্মীরাও।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version